বর্ষায় বৃষ্টি উপভোগ করতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এ সময় হাওর, ঝরনা কিংবা সমুদ্র ভ্রমণে যান কমবেশি সবাই। আবার বর্ষায় ভারতের বিভিন্ন স্থানের সৌন্দর্য উপভোগে অনেকেই সে দেশে ঘুরতে যান।
তবে বর্ষায় যেখানেই আপনি ভ্রমণে যান না কেন, অবশ্যই আগে থেকে সেখানকার পরস্থিতি জেনে তবেই ভ্রমণে যাওয়া উচিত। আপনি যদি বর্ষায় ভারত ভ্রমণে যান তাহলে বেশ কয়েকটি স্থান এড়িয়ে চলুন। জেনে নিন কোন স্থানগুলো-
কিন্নর
কিন্নর উপত্যকা সারাবছরই সুন্দর। তবে বর্ষা মৌসুমে এই স্থানে ভ্রমণ হতে পারে বিপজ্জনক। কারণ এ সময়ে আবহাওয়া বেশ খারাপ থাকে। অবিরাম বৃষ্টির কারণে কিন্নরে প্রায়ই ভূমিধস ও বজ্রপাত ঘটে। তাই জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে এই স্থানটি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
উত্তরাখণ্ড
বর্ষাকালে উত্তরাখণ্ডের আবহাওয়া বেশ ভয়ংকর হয়ে ওঠে। দিল্লি-এনসিআরের কাছাকাছি হওয়ার কারণে, স্থানটিতে প্রায় সারা বছরই ভিড় থাকে।
তবে মনে রাখবেন, বর্ষাকালে উত্তরাখণ্ডের উপরের অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ফলে ভূমিধস, বন্যা ও বজ্রপাত ঘটে। আবহাওয়াবিদরাও আবহাওয়ার সতর্কতা জারি করে যাতে পর্যটকরা ট্রেকিং ও ওই স্থান এড়িয়ে চলেন।
আসাম
বর্ষা মৌসুমে আসামের বিভিন্ন অংশ থেকে প্রায় প্রতি বছরই ভূমিধসের খবর পাওয়া যায়। যদিও বৃষ্টির সময় আসামের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়, তবে এ সময় আসাম পরিদর্শন এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। এ বছরও আসামের বন্যা বিধ্বংসী হয়েছে, বিভিন্ন স্থানে ভূমিধসের কারণে রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বিহার
বিহার ভ্রমণের সেরা সময় হলো বর্ষার পরে অর্থাৎ অক্টোবর-মার্চ মাস পর্যন্ত। এই স্থানটিও বন্যাপ্রবণ। বর্ষায় বুরহি, কোসি, গন্ডক ও বাগমতির মতো প্রধান নদীগুলো হিমালয় থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর বিহারে প্রবাহিত হওয়ার কারণে, তারা প্রায়শই বড় আকারের ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হয়ে ওঠে।
মেঘালয়
মেঘালয়ে এবার ১-২২ জুনের মধ্যে বিগত বছরের তুলনায় ১৬১ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানকার ৫০৩.১ মিলি মিটার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের বিপরীতে এবার ১৩১৪.৪ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এর ফলে ভূমিধস ও মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাতায়াত ব্যাহত হয়। শুধু সড়ক নয়, মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগও বিঘ্নিত হয়েছে। তাই বর্ষা মৌসুমে মেঘালয় এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে মেঘালয় ভ্রমণ করুন।
দার্জিলিং
দার্জিলিংও বর্ষার সময় নিস্তেজ হয়ে যায়। সেখানেও দিনের বেশিরভাগ সময় অবিরাম ধারায় বর্ষণ হয়। সেখানকার মানুষ সারাদিন রেইনকোট পরে থাকেন। এ সময় চা বাগানের আশপাশে চলাচল আরও কষ্টকর হয়ে ওঠে, কারণ তখন রাস্তাগুলো পিচ্ছিল হয়ে যায়। দার্জিলিং ভ্রমণে যাওয়ার সেরা সময় হলো গ্রীষ্মকাল।
মুম্বাই
বর্ষাকালে মুম্বাইয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার মতো। তবে এ সময় মানুষের ভোগান্তিও থাকে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি। বর্ষায় সেখানে লোকাল ট্রেন পরিসেবাগুলো অবিরাম বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। তখন জলাবদ্ধতার কারণে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।