সোমবার , ১৮ জুলাই ২০২২ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

বিশ্বজিৎ হত্যা: যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক কামরুল গ্রেফতার

প্রতিবেদক
pappu
জুলাই ১৮, ২০২২ ৫:১৮ অপরাহ্ণ

আলোচিত বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. কামরুল হাসানকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর কামরুল পার্শ্ববর্তী দেশে তার নানার বাড়ির আত্মীয়ের আশ্রয়ে আত্মগোপন করেন। মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের দুই মাস পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে ৫০ লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেন কামরুল।

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে র‌্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (অপস্ ও ইন্ট শাখা) পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস এসব তথ্য জানান।

আঘাতে তার কাপড় ছিঁড়ে যায় ও পুরো শরীরে রক্তের বন্যা বয়ে যায়। তিনি আবারও পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আঘাত অব্যাহত থাকে। একপর্যায়ে বিশ্বজিৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। প্রাণ বাঁচানোর শেষ চেষ্টায় তিনি উঠে দৌড় দেন, কিন্তু শাঁখারীবাজারের একটি গলিতে গিয়ে ঢলে পড়ে যান। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় এক রিকশাচালক তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বিশ্বজিৎকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত বিশ্বজিৎ শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর গ্রামের দাসপাড়া মহল্লার বাসিন্দা অনন্ত দাসের ছেলে। তিনি ২০০৬ সালে রাজধানীর শাঁখারীবাজারে নিউ আমন্ত্রণ টেইলার্সে দর্জির কাজ শুরু করেন। বিশ্বজিৎ বিবদমান দুটি পক্ষের কোনোটির সঙ্গেই জড়িত ছিলেন না। তিনি জীবিকার তাগিদে ঘটনার সময় তার লক্ষ্মীবাজারের বাসা থেকে শাঁখারীবাজারে নিজের কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন।

এ চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ এ ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলাটি পরে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মামলার রায়ে ২১ আসামির মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করলে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামির মধ্যে দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, চারজনের মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন এবং অন্য দুজনকে খালাস দিয়ে ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামির মধ্যে দুজন আপিল করলে খালাস পান।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি জানান, ঘটনার দিন বিশ্বজিৎকে প্রতিপক্ষ দলের সদস্য ভেবে তারা ধাওয়া করেন। এরপর মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। বিশ্বজিৎ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে তিনি জানতে পারেন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বিশ্বজিতের মৃত্যু হয়েছে এবং এ ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়েছে। এরপর তিনি পার্শ্ববর্তী দেশে তার নানার বাড়ির আত্মীয়ের আশ্রয়ে আত্মগোপন করেন। মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের দুই মাস পর তিনি দেশে ফিরে আসেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ১৯৯৪ সালে বাবার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কামরুলের পরিবার ঢাকায় বসবাস করতো। তার বাবার মৃত্যুর পর তারা গ্রামের বাড়ি চলে যায়। তারা তিন বোন ও এক ভাই। কামরুল সবার ছোট। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে একটি স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি এবং একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ২০০৫ সালে তিনি ঢাকার একটি কলেজে হিসাব বিজ্ঞানে স্নাতকে ভর্তি হন। তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

২০১১ সালে কামরুল তার সহপাঠীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার একটি ছেলেও রয়েছে। ২০১৩ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশে ফিরে এসে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এ সময় তিনি জীবিকার সন্ধানে বিভিন্নজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। প্রথমে তিনি ছদ্মনামে গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করেন। এরপর তার সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের মূলহোতা খোকন ও সোহেলের সঙ্গে পরিচয় হয়। তারা তাকে প্রলুব্ধ করে যে, তিনি প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে ঘরে বসেই প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

‌‘কামরুল ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন বিক্রি করে ৫০ লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেন। অবৈধ উপার্জন দিয়ে তিনি কক্সবাজার সদর এলাকায় হোটেল ব্যবসা চালু করেন। লকডাউনে লোকসানের কারণে তার হোটেল ব্যবসা বন্ধ করে দেন। বর্তমানে তার দৃশ্যমান কোনো পেশা নেই’- যোগ করেন বীণা রানী দাস।

আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেফতার কামরুলকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ - সারাদেশ