ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেফতার প্রতারকচক্রের দুই সদস্য মো. আজিবুল হাসান ওরফে এমরান ও মো. কবির উদ্দিন পিয়াসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৯ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) ম্যাজিষ্ট্রেট বেগম ফারহা ছন্দা দিবা এ আদেশ দেন।
এদিন রিমান্ড শেষে দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার (১৩ জুলাই) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। শুক্রবার (১৫ জুলাই) তাদের আদালতে হাজির করা হয়। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের দশদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামি আজিবুল, কবিরের দুদিন ও বিউটির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই তিন আসামি ‘ফেয়ারফ্যাক্স বাংলাদেশ প্রকল্প ও ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্ট’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান খুলে পত্রিকায় ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। প্রতিষ্ঠান দুটিতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন তারা।
ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছরের ১৫ জুন মার্কিন বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ফেয়ারফ্যাক্সের অর্থায়নে গড়ে তোলা ‘ফেয়ারফ্যাক্স বাংলাদেশ প্রকল্প’ নামের বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থায় ৬ হাজার ৪৭২টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত বলে উল্লেখ করা হয়।
একই দিনে তারা বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্টে ১ হাজার ৯৪৪টি পদে নিয়োগের জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ট্রাস্টটির একটি ভুয়া নিবন্ধন নম্বরও ব্যবহার করা হয়।
দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেই প্রতিটি পদের জন্য সোনালী ব্যাংকের বেগম রোকেয়া স্মরণি, মিরপুর, ঢাকা শাখায় পে অর্ডারের মাধ্যমে একটি হিসাব নম্বরে ১৫০-৫০০ টাকা হারে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেই একই অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। ঠিকানায় ব্যবহার করা বাড়ির মালিক আমেরিকা প্রবাসী। বিষয়টি শোনার পর তিনি পুলিশকে জানান, তার বাড়িতে ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্ট’ বা ‘ফেয়ারফ্যাক্স বাংলাদেশ প্রকল্প’ নামের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। এ ঘটনায় বাড়ির মালিক রাজধানীর কাফরুল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।