খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ৮ স্থানে ৮টি স্টিল সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৫টি রাইস সাইলো আর ৩টি গমের। এছাড়া খুব শিগগির ৩০টি পেডি সাইলো নির্মাণের কাজ শুরু হবে। চট্টগ্রামে গমের সাইলো দেশের খাদ্য সংরক্ষণে বড় ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ১ লাখ ১৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন গমের আধুনিক স্টিল সাইলো নির্মাণকাজের ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। পরে তিনি চট্টগ্রামে গমের স্টিল সাইলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
তিনি বলেন, দেশে ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য শষ্য সংরক্ষণের সক্ষমতা আছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য মজুতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সরকার। কৃষকের ভেজা ধান সাইলোতে শুকিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তায় কাজ করছে সরকার।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তবে তুরস্কের মধ্যস্থতায় একটি সমঝোতা হতে যাচ্ছে। ইউক্রেন ও রাশিয়া খাদ্যপণ্য রপ্তানি করার বিষয়ে একটি চুক্তি করেছে যা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে, গম আনতেও কষ্ট হবে না।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত সচিব খুরশীদ ইকবাল রেজভী, আধুনিক স্টিল সাইলো প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করীম শেখ, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম কমান্ড-এর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য প্রকৌশলী তৃণা মজুমদার, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আবদুল কাদের ও চট্টগ্রাম সাইলোর সুপার ফয়জুল্লাহ খান শিবলী।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৫৩৭.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য চট্টগ্রামে গমের সাইলোর নির্মাণকাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে । ১২,৭০০ মেট্রিক টন ক্ষমতার মোট ৯টি সাইলো বিন রয়েছে সাইলোটিতে। এ সমস্ত সাইলো বিনে কীটনাশক ব্যবহার ব্যতিরেকেই অত্যাধুনিক চিলার ও নাইট্রোজেন ফিউমিগেশন যন্ত্রের মাধ্যমে আদ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে মজুত চাল প্রায় দুই বছর সংরক্ষণ করা যাবে।
সড়ক ও নৌপথে এ সাইলোর সরবরাহ ও বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে বিদেশ থেকে জাহাজে করে বাল্ক আকারে আমদানীকৃত গম এ সাইলোতে মজুত করা হবে। মজুত করা গম বাল্ক আকারে অভ্যন্তরীণ অন্যান্য সাইলোতে রেল ও নৌপথে সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও ৫০ কেজির বস্তায় করে গম সড়ক ও রেলপথে বিভিন্ন এলএসডিতে ও সিএসডিতে বিতরণের জন্য পাঠানো হবে। এ সাইলো নির্মাণের কাজ করছে বাংলাদেশের কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও আমেরিকার দ্য জিএসআই গ্রুপ।