মামলা থেকে মুক্তির দাবিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের গেটের বাইরে রাস্তার ওপর মানববন্ধন করেছেন মো. ইকবাল হোসেন নামের এক মাদরাসাশিক্ষক। অবশ্য দুই ঘণ্টা পর তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
ইকবাল হোসেনের বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায়। তিনি হাজিগঞ্জ উপজেলার কাকৈরতলা ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার গণিতের শিক্ষক।
২০১৬ সালে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় এক ব্যক্তি ও সহযোগীরা মিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তার বিরুদ্ধে ২১টি মামলা করে বলে অভিযোগ করেন ইকবাল হোসেন।
এসব মামলা থেকে মুক্তির দাবিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেটের পাশে সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন মো. ইকবাল হোসেন নামের এ শিক্ষক।
সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেটের পাশে ব্যানার টানিয়ে ফুটপাতে অবস্থান নেন তারা। ব্যানারে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা থেকে মুক্তি এবং আজিজুল হক পাটোয়ারী নামের এক ব্যক্তি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ কামনা করার কথা উল্লেখ রয়েছে।
এসময় এ শিক্ষকের সঙ্গে স্ত্রী, ছোট ভাই, স্কুলপড়ুয়া ছেলে ও সাড়ে চার বছর বয়সী কন্যাশিশুকেও ব্যানার নিয়ে দাঁড়াতে দেখা যায়। এছাড়া এক বয়স্ক নারীও সঙ্গে ছিলেন। এসময় কন্যাশিশুকে কোলে নিয়ে শিক্ষকের স্ত্রী সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ছেলেও ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে ছিল।
তখন দায়িত্বরত পুলিশ তাদের সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে সরে অন্য কোথাও যেতে বললে তারা সরে যান বলেও জাগো নিউজকে জানান ইকবাল হোসেন।
ইকবাল অভিযোগ করে বলেন, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা জজ কোর্টে মামলাগুলো করা হয়। স্থানীয় ওই ব্যক্তি নিজে ১৩টি, তার ছেলে তিনটি এবং বাকিগুলো ওই ব্যক্তির চক্রের লোকেরা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ তার।
শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির তিনটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া চাকরিচ্যুত করার জন্য ১২৫টি অভিযোগ করা হয়।
দেড় বছর ধরে বাড়িতে যেতে পারছেন না বলে দাবি করে ইকবাল বলেন, সন্তানরা বাবাকে পাচ্ছে না। ঠিকমতো চাকরিও করতে পারছি না।
২১টি মামলার মধ্যে তিনটির আসামি না হয়েও ৩৫ দিন জেল খাটতে হয়েছে বলেও অভিযোগ ইকবাল হোসেনের। তার দাবি, জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে ওই চক্র বিভিন্ন জেলা ও থানায় মামলাগুলো করে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্র অস্পষ্ট, আবার কোনোটিতে সংখ্যা কম, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলায় উল্লেখিত ঠিকানায় বাদীকে পাওয়া যায় না।
তবে ইকবাল হোসেন বলেন, ২১টির মধ্যে ১৬টি মামলা খারিজ হয়েছে। অন্য পাঁচটিতে তিনি জামিনে আছেন। অপহরণ, প্রতারণা, টাকা নেওয়া–এমন সব অভিযোগে এসব মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় একের পর এক মামলা হয়, ওয়ারেন্ট আসে। আসলে কতটি মামলা আছে, জানি না।
তিনি বলেন, মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চাই। মামলাবাজ এ চক্রকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। তাই এখানে এসেছি।