মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নয় মাসের যুদ্ধের পাশাপাশি ২৩ বছরের সংগ্রামের চিত্র তুলে আনার আহ্বান জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকার পাশাপাশি রাজাকার ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের কর্মকাণ্ডের চিত্রও লিখতে হবে।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য বজলুর রহমান স্মৃতিপদক ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, শুধু নয় মাসের যুদ্ধ বললেই হবে না। এর সঙ্গে ২৩ বছরের সংগ্রামের চিত্র তুলে আনতে হবে। এটি এক বৃত্তে দুটো ফুলের মতো। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের কর্মও তুলে আনতে হবে। একপাক্ষিক হয়ে যাচ্ছে, এটা কিন্তু ঠিক নয়। ইতিহাস কখনো একপাক্ষিক হয় না। মুক্তিযুদ্ধের গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকার পাশাপাশি রাজাকার ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের কর্মকাণ্ডের চিত্রও লিখতে হবে।
মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাধীনতার সময়ে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রিপোর্ট করেছেন, লিখেছেন, তারা কলমযোদ্ধা। বেতার কেন্দ্রে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন, গান কবিতা আবৃত্তি করেছেন, তারাও কণ্ঠযোদ্ধা। আমরা যারা সশস্ত্র যুদ্ধ করেছি, তারাই শুধু মুক্তিযোদ্ধা নয়, যে যার ক্ষেত্র থেকে দেশের পক্ষে কাজ করেছেন, তারাই মুক্তিযোদ্ধা।
তিনি বলেন, আমি যেহেতু রাজনৈতিক কর্মী একেবারেই নির্মোহ থাকি না। থাকা যায় না। সবাই যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মনে প্রাণে ধারণ করে, দলীয়করণের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে পারে, আমরা সেটা চাই। বজলুর রহমান ছিলেন তেমন একজন। তার মৃত্যুর পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যেন সমৃদ্ধ হয়, পরবর্তীসময়ে প্রজন্ম যেন উপকৃত হয়, সেজন্য বজলুর রহমান স্মৃতি পদকের আয়োজন করেছে তার পরিবার। এটি নিশ্চয়ই নতুন প্রজন্মকে পথ দেখাবে।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারোয়ার আলী শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। জুরি বোর্ড প্রধান অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারা যাকের, ঢাবির অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ একটি চলমান যুদ্ধ। আমরা একাত্তরে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছি। এখন কথা-কাজে, চিন্তা দর্শনে আচরণে মুক্তিযুদ্ধ চলমান। এটা থাকবে। আজকে তরুণরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাবে, লেখে এবং গবেষণা করে এটা পরম আনন্দের। এভাবেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও এর চেতনা প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে যাবে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য বজলুর রহমান স্মৃতিপদক ২০২১ পেয়েছেন প্রিন্ট ক্যাটাগরিতে যুগ্মভাবে সমকালের সিনিয়র রিপোর্টার আবু সালেহ রনি, প্রথম আলোর লেখক ও গবেষক শাহদুজ্জান ও ড. খায়রুল ইসলাম। ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে পদক পেয়েছেন একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার পার্থ সনজয়।