প্যারামেডিকেল কোর্স করে নিজেকে পরিচয় দিতেন সরকারি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার বলে। এ অপরাধে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় মুনতাকা দিলশান ঝুমা (২২) নামের এক তরুণীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুন্নবীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত উলানিয়া বাজারে সান্ত্বনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালান। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে মুনতাকা দিলশান ঝুমার এসব প্রত্যারণার তথ্য বেরিয়ে আসে। পরে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মুনতাকা দিলশান ঝুমা উপজেলার আন্ধারমানিক ইউনিয়নের মানছুর বিল্লাহের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, আন্ধারমানিক ইউনিয়নের মো. মারুফ নামের এক ব্যক্তি সান্ত্বনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী। ঝুমা তার ভাইয়ের স্ত্রী। মারুফ তার ভাইয়ের স্ত্রীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। ঝুমাও নিজেকে মেডিকেল অফিসার পরিচয় দিতেন। এমনকি ব্যবস্থাপত্রেও মেডিকেল অফিসার লেখা রয়েছে। এভাবে মুনতাকা দিলশান ঝুমা প্রতারণা করে আসছিলেন। বিষয়টি দীর্ঘদিন গোপন থাকলেও সম্প্রতি রোগীদের সন্দেহ হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুন্নবী বলেন, সান্ত্বনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও সেখানের চিকিৎসক মুনতাকা দিলশান ঝুমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে দুপুরে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মেডিকেল অফিসার পরিচয় দেওয়া মুনতাকা দিলশান ঝুমা নিজেকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পরিচয় দেন।
তার কথায় সন্দেহ হলে তার এমবিবিএস সনদ ও রোগী দেখার জন্য বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন দেখতে চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি কোনোটিই দেখাতে পারেননি। পাশাপাশি নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মুনতাকা দিলশান ঝুমা নামে কোনো মেডিকেল অফিসার নেই বলে জানানো হয়।
ইউএনও আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ঝুমা প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি আদালতকে জানান, এইচএসসি পাস করে তিনি প্যারামেডিকেল একটি কোর্স করেছেন। ওই কোর্স সম্পন্ন করে নিজেকে মেডিকেল অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রায় এক বছর ধরে সান্ত্বনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখে আসছেন এবং রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন।
প্রতারণার অপরাধে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণার আশ্রয় আর নেবেন না বলে মুচলেকা দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।