যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে একটি মসজিদে এশার নামাজের সময় মুসল্লিদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় অন্তত দুজনের পায়ে আঘাত লাগে। গত সপ্তাহের ওই ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় মুসল্লিদের মধ্যে।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, সাত বছর আগে চালু হওয়া মসজিদটিতে প্রধানত বাঙালি মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের খবরে বলা হয়েছে, গত সোমবার (১ আগস্ট) নিউ জার্সির প্যাটারসন শহরের আবু বকর ইসলামিক কংগ্রেগেশন মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন মুসল্লিরা। এখন নামাজ শুরু হয়ে গেলে আর কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সাজ্জাদ চৌধুরী জানান, সোমবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে নামাজ শুরু হয়ে গেলে দুই ব্যক্তি মসজিদে ঢোকেন। তারা আসসালামু ওয়ালাইকুম বলে অনুরোধ জানায়, তাদের যেন ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়।
কিন্তু ভিডিওতে দেখা যায়, ভেতরে ঢুকেই নামাজরত মুসল্লিদের ওপর পেছন থেকে পাথর ছুড়ে মারে দুই দুর্বৃত্ত। এসময় তৃতীয় আরেক ব্যক্তি দরকার কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। পরে তারা তিনজনই দৌড়ে পালিয়ে যায়।
সাজ্জাদ জানান, কয়েক মিনিট পরে ওই লোকগুলো ফিরে এসে আবার মুসল্লিদের দিকে পাথর ছোড়ে। এতে দুজনের পায়ে আঘাত লাগে। তবে কেউ আহত হননি। তিনি বলেন, আমরা খুব আতঙ্কিতবোধ করছি।
জাহসিন ইউদ্দীন নামে আরেক সদস্য বলেন, আমরা কাউকে বিরক্ত করিনি এবং আমি জানি না কেন মানুষ এমন করে। সবারই ধর্মীয় রীতি পালনের অধিকার রয়েছে।
প্যাটারসনের মেয়র আন্দ্রে সায়েগ বলেছেন, তারা (মুসলিমরা) শান্তির জন্য প্রার্থনা করছে। তাদের সহিংসতার মুখে পড়া উচিত নয়।
প্যাসাইক কাউন্টি শেরিফ রিচার্ড বার্ডনিক বলেন, মুখোশধারীরা মসজিদে গিয়ে মুসল্লিদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা খুবই ঘৃণ্য ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা মসজিদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করছে এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
প্যাসাইক কাউন্টির প্রসিকিউটর ক্যামেলিয়া ভালদেস এ ঘটনার তদন্ত করছেন। তিনি বলেন, আমরা সব ভিডিও পর্যালোচনা করছি। এটি সম্পর্কে তথ্য থাকতে পারে এমন সব লোকের সঙ্গে আমরা কথা বলবো। প্রসিকিউটর জানান, মুসল্লিদের ওপর পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় অন্তত তিনজন জড়িত দেখা গেছে। তবে আরও তিনজন জড়িত থাকতে পারে।
এ ঘটনার মাত্র আট মাস আগে মুসল্লিদের ওপর হামলার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মসজিদ থেকে আজানের শব্দ নিয়ে অভিযোগ ছিল তার।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস জানিয়েছে, নিউ জার্সিতে এ বছর প্রায় ১০০টি পক্ষপাতমূলক ভীতিপ্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে। হামলা থেকে বাঁচতে মার্কিন অঙ্গরাজ্যটির মসজিদগুলোতে বুলেটপ্রুফ জানালা বসানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।