বিএনপিসহ কিছু দল ও প্রতিষ্ঠান জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, দেশে একটি মহল সবসময় বিভ্রান্তি ছড়ায়। পদ্মা সেতু থেকে যখন বিশ্বব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নিলো তখন টিআইবি, সিপিডি লাফিয়ে লাফিয়ে অনেক বক্তব্য দিয়েছে। বিএনপিও লাফিয়ে লাফিয়ে বক্তব্য রাখছিল। আর বিএনপির সঙ্গে সিপিডি, টিআইবিও লাফাচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তর আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আলোকচিত্র ও এলইডি প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে ও প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া সূচনা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। আমাদের দেশে ডিজেলের মূল্য ১১৪ টাকা, কলকাতায় সেটি ১১৬ টাকা। অর্থাৎ কলকাতার চেয়ে এখনো এখানে কম আছে। এই মূল্যবৃদ্ধির পরও বিপিসিকে প্রতি লিটার ডিজেলে ৮ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ব্যক্তি যারা নিজেকে বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচয় দেন, আমিও তাদের বুদ্ধিজীবী হিসেবেই গণ্য করি। কিন্তু সময়ে সময়ে তাদের বুদ্ধি লোপ পায়, সময়ে সময়ে বিশেষ উদ্দেশ্যে তাদের বুদ্ধি ব্যবহৃত হয়। তারা কয়েকদিন ধরে যেভাবে কথাবার্তা বলছেন এটি জনগণকে বিভ্রান্ত করার শামিল। আমি আশা করবো তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার এই অপচেষ্টা থেকে বেরিয়ে আসবেন। যখন বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলভাবে জ্বালানি তেলের দাম কমবে তখন সরকার আবার মূল্য সমন্বয় করবে।
বিএনপি তাদের আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি বিএনপি আসলে বাস্তব পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেছে। কারণ ঈদের পরে, শীতের পরে, পরীক্ষার পরে, বর্ষার পরে আন্দোলনের কথা বলে বলে নিজেদের হাস্যকর বানিয়েছে। তাদের আন্দোলনে তাদের কর্মীরাও সাড়া দেয় না। এটি বুঝতে পেরেই তারা নতুন ঘোষণা দিয়েছে বলে আমি মনে করি।
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে অন্যতম জঘন্যতম একটি হত্যাকাণ্ড। বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই তাকে হত্যা করা হয়। যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় তখন বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ, অর্থাৎ সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেই সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আমরা ৮ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম, কিন্তু ৯ শতাংশ আমরা এখনো ছুঁতে পারিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের এবং রেডিও, টেলিভিশনসহ সব ক্ষেত্রে পাকিস্তানি ভাবধারা ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা হয়েছিল। তখন থেকে জাতি এক জায়গায় ঘুরপাক খেয়েছিল দীর্ঘ ২০ বছর। সেই অচলাবস্থা ভেঙেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে আবার সরকার গঠন করার মধ্য দিয়ে। এরপর ২০০৮ সালে সরকার গঠন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সাড়ে ১৩ বছরে যেভাবে এগিয়ে গেছে, আজকে বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে একটি গর্বিত রাষ্ট্র।