‘সাহসী হিরো আলম’ ছবিতে সেকেন্ড ভিলেন (দ্বিতীয় খলনায়ক) হিসেবে অভিনয়ের জন্য ১৫ হাজার টাকায় চুক্তি করেছিলেন জুনিয়র আর্টিস্ট নয়ন মণ্ডল ওরফে জুনিয়র মিশা। অভিযোগ রয়েছে, চুক্তির এই টাকা না দিয়ে জুনিয়র মিশাকে মারধর করেন আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম।
মারধরের বিচার চেয়ে ২০২০ সালের ২৩ জুলাই ঢাকার আদালতে হিরো আলমের বিরুদ্ধে সিআর মামলা ঠুকেন জুনিয়র মিশা। মামলার পর জুনিয়র মিশা আদালতে সাত ধার্য তারিখ উপস্থিত হননি। এই সময়ের মধ্যে বাদী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম মামলাটি খারিজ করে দেন।
এ বিষয়ে জুনিয়র মিশা বলেন, শুটিংয়ের টাকা চাইতে গেলে হিরো আলম আমাকে মারধর করেন। আমি আদালতে এর বিচার চেয়ে মামলা করি। মামলার প্রতি ধার্য তারিখে যে হাজিরা দিতে হয় তা আমি জানতাম না। এ বিষয়ে রিভিশন করবো।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউর হেমায়দ উদ্দিন হিরোন বলেন, সিআর মামলায় প্রতি ধার্য তারিখে বাদীকে পদক্ষেপ নিতে হয়। বাদী পদক্ষেপ না নিলে আদালত তা খারিজ করে দেন। এই মামলার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
‘সাহসী হিরো আলম’ ছবির নায়িকাদের সঙ্গে আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম
আদালত সূত্রে জানা যায়, শুটিংয়ের টাকা না দিয়ে মারধরের অভিযোগে হিরো আলমের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমানের আদালতে মামলা করেছিলেন জুনিয়র মিশা। সে সময় আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে মামলার পর থেকে আদালতে হাজিরা দেননি জুনিয়র মিশা।
মামলার অভিযোগে বাদী বলেন, আমি হিরো আলমের সঙ্গে ‘সাহসী হিরো আলম’ ছবিতে সেকেন্ড ভিলেন হিসেবে অভিনয়ের জন্য ১৫ হাজার টাকায় চুক্তি করি। চুক্তি অনুযায়ী গাজীপুরের মনপুরা শুটিংস্পটে অভিনয় করতে যাই। যেখানে কিছুদিন অভিনয় করি। এর মধ্যে ঢাকায় আসার সময় তিনি আমার হাতে ৫০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘টাকা পরে দেবো।’ আমি বাসায় এসে কিছুদিন পর তার মোবাইলে ফোন দেই। এরপর তিনি ফোনে আমাকে বলেন- ‘কিসের টাকা পাবি তুই। তুই কোনো টাকা পাবি না।’
মামলার বাদী আরও বলেন, এরপর গাজীপুরে ছবির শুটিংস্পটে আমি যাই। টাকা চাইলে হিরো আলম আমাকে শুটিংয়ের দা দিয়ে আঘাত করেন ও কিল-ঘুষি মারেন। পরে আমি সেখান থেকে চলে আসি। এরপর ১৯ জুন এফডিসিতে মানববন্ধনে অংশ নেই। হিরো আলম সেখানেও আমাকে মারধর করেন। হিরো আলমের লোকজনের ভয়ে আমি জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি। তাই আদালতে মামলা করি।
তবে মামলার পরের দিন এই বিষয়ে মুখ খুলেন হিরো আলম। তার বিরুদ্ধে জুনিয়র মিশার তোলা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
হিরো আলম জাগো নিউজকে বলেন, এইসব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বলতে ইচ্ছা করে না। এক বছর আগে নয়ন (জুনিয়র মিশা) আমার ছবিতে অভিনয় করেছে। মাত্র একটা দৃশ্যে অভিনয় করেছে। শুটিং করেছে একদিন। এক বছর পরে তিনি কোন হিসাবে টাকা চাচ্ছে আমি বুঝলাম না। একটা ফাইটিং দৃশ্যে অভিনয় করেছে। এমন দৃশ্য অভিনয় করার জন্য আমরা খুব বেশি হলে এক থেকে দুই হাজার টাকা দিয়ে থাকি। এতদিন পর কেন টাকা দাবি করছে সেটা আমারও প্রশ্ন!
এই মামলার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে জানান হিরো আলম। বলেন, আমাকে নিয়ে কিছু করলেই এখন খুব সহজে ভাইরাল হওয়া যায়। এই কারণেও আমার পেছনে লাগতে পারে।