শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও নাম কীর্তনসহ নানা আয়োজনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) জন্মষ্টমী উদযাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এদিন বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার হয়ে মেইন গেটে এসে শেষ হয়।
দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে গীতাপাঠ করেন জবি শিক্ষার্থী অনামিকা মল্লিক।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী দেবানন্দ মন্ডল ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দেবাশীষ চন্দ্র শীল সূচনা বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি উপাসনালয় স্থাপনের দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অনির্বাণ সরকারের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. পরিমল বালা।
তিনি বলেন, আজ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব দিবস। কারণ ভগবান বা সৃষ্টিকর্তার জন্ম বা মৃত্যু হয় না। দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আসলে পৃথিবীতে যখন পাপ বেড়ে গিয়েছিল তখনই শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয়েছিল।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, প্রত্যেক ধর্মের মূল বার্তা একটিই। সেটি হচ্ছে শান্তি। আজ এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বী অনেকে উপস্থিত হয়েছেন, যার মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ পেয়েছে। শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব স্থান মথুরায় আমি দুইবার গিয়েছি। সেখানকার বাস্তবচিত্র দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে প্রতিটি ধর্মাবলম্বীদের জন্যই আলাদা আলাদা উপাসনালয় থাকবে।
সমাপনী বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. রবীন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আজকের উৎসব যথাযথভাবে উদযাপন সম্ভব হচ্ছে। এটিই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত।
এসময় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক ড. কাজী নাসিরউদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
