শনিবার , ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

অনুৎপাদনশীল ব্যয় বৃদ্ধিতে বাজেটের সুফল কমছে

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বৃদ্ধির বাজেটে দীর্ঘমেয়াদি সুফল কমছে। দেশি-বিদেশি ঋণনির্ভরতা অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় বিগত অর্থবছরের ১০ মাসে বাজেটের অনুন্নয়ন বাজেটের এক-চতুর্থাংশই চলে গেছে সুদ পরিশোধ খাতে। অথচ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরের বছর সুদ খাতে ব্যয় ১৯ শতাংশের মতো। সুদ ছাড়াও বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয়ও এ সময়ে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।

সূত্র জানায়, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে যেখানে এই খাতের ব্যয় মোট বাজেট ব্যয়ের ১৭ শতাংশ ছিল, তা বিগত অর্থবছরের ১০ মাসে ২৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ ছাড়া ভর্তুকি ও হস্তান্তর খাতে এ সময়ে অনুন্নয়ন বাজেটের ৪২ শতাংশ ব্যয় হয়ে গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়ন সংক্রান্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিগত অর্থবছরের ১০ মাসে মোট বাজেটের ৬৫ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে এ সময়ে সুদ পরিশোধ খাতে সারা বছর যে বাজেট বরাদ্দ ছিল তার ৮২.৯ শতাংশ খরচ হয়েছে। অথচ স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষা আর কৃষি খাতে ১০ মাসে বাজেট বাস্তবায়ন হার ছিল ৫৫, ৬৭ ও ৬৩ শতাংশ। বাকি খাতগুলোর মধ্যে শিক্ষায় বাজেটের সর্বোচ্চ ৬৮ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়। আলোচিত সময়ে অনুন্নয়ন বাজেটের যে ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা খরচ হয় তার মধ্যে ২৪ শতাংশ যায় সুদ বাবদ, সাধারণ পাবলিক সার্ভিস খাতে ব্যয় হয় ২২ শতাংশ, শিক্ষা খাতে ১৫ শতাংশ, প্রতিরক্ষা খাতে ১০ শতাংশ এবং জনশৃঙ্খলা খাতে ব্যয় হয় ৮ শতাংশ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, বিবেচ্য ১০ মাস সময়ে অনুন্নয়ন বাজেটের ব্যয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে বেতনভাতা বাবদ ব্যয় বেড়েছে ১১ শতাংশ, সুদ খাতের ব্যয় বেড়েছে সোয়া ১১ শতাংশ, ভর্তুকি ও হস্তান্তর খাতের ব্যয় বেড়েছে ৩১ শতাংশ।

অন্য দিকে অনুন্নয়ন বাজেটের তুলনায় উন্নয়ন বাজেটের ব্যয় কম হওয়ায় সার্বিক বাজেট ব্যয় ১০ মাসে বেড়েছে ১৪ শতাংশ। এতে জিডিপির অনুপাতে এবার বাজেট ব্যয় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাজেট ব্যয় ছিল জিডিপির ১৩.০৪ শতাংশ। এবার ১০ মাসে এটি দাঁড়িয়েছে ৯.৭৩ শতাংশে। শেষ দুই মাসে একই হারে বাজেট ব্যয় হলে অর্থবছর শেষে জিডিপির ১৩ শতাংশের নিচে থেকে যেতে পারে বাজেট ব্যয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত ১০ মাসের হিসাব অনুসারে এ সময়ে ৫৪ হাজার ৯২ কোটি টাকা ব্যয় হয় বেতন-ভাতা খাতে। একই সময়ে সুদ ব্যয় হয় ৫৬ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের জন্য ব্যয় হয় ৫২ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের জন্য সুদ দিতে হয় ৪ হাজার ৪২ কোটি টাকা। এ সময়ে ভর্তুকি ও স্থানান্তর খাতে ব্যয় হয় ৯৪ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে অনুন্নয়ন খাতে এক মাসের বাজেট ব্যয় দাঁড়ায় ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি।

জানা গেছে, ১০ মাসে মোট উন্নয়ন ব্যয় হয় ৭৯ হাজার ১৪২ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের ব্যয়ের তুলনায় ৫.৮৮ শতাংশ বেশি। বিবেচ্য ১০ মাসে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলিয়ে মোট ব্যয় হয় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭০২ কোটি টাকা, যা আগের একই সময়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি।

এদিকে, বিগত অর্থবছরের বিবেচ্য ১০ মাসে মোট রাজস্ব আদায়ে কর রাজস্বে সাফল্য এলেও ব্যর্থতা দেখা যায় করবহিভর্ত রাজস্বে। এ সময়ে মোট ৩ লাখ ৭ হাজার ৯৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়, যা আগের বছরের তুলনায় ২১.২২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আদায় পৌনে ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ লাখ ৭১ হাজার ৪১১ কোটি টাকায় উন্নীত হলেও এনবিআর-বহিভর্’ত কর রাজস্ব ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৫ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।

করবহিভর্’ত রাজস্ব খাতে বিগত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বড় ধরনের রাজস্ব হ্রাস লক্ষ্য করা যায়। বিবেচ্য সময়ে আগের বছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৩৩ ভাগ রাজস্ব হ্রাস পেয়ে আদায় দাঁড়ায় ৩০ হাজার ৩৪১ কোটি টাকায়। আগের বছর এ খাতে ৩৪ শতাংশ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

সার্বিকভাবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে যেখানে ২৩.৫ শতাংশ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছিল এবার সেখানে ১০ মাসে রাজস্ব বেড়েছে ২১.২ শতাংশ। যা মূলত কর রাজস্বের উচ্চতর প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে অর্জিত হয়েছে। অর্থবছরের প্রথমার্ধের মধ্যে আগস্ট-সেপ্টেম্বর এবং ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ভাল হয়েছে।

 

 

সর্বশেষ - দেশজুড়ে