রবিবার , ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

অর্থনীতি বিপর্যয়ে রেখেই বিদায় নিচ্ছেন বরিস জনসন

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ ৪:৪৫ অপরাহ্ণ

করোনাকালে নিয়ম ভেঙে পার্টির আয়োজনসহ নানা বিতর্ক ও সমালোচনার জেরে গত জুলাইয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বরিস জনসন। এর পরপরই শুরু হয় তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচনের প্রক্রিয়া। কয়েক দফা ভোটাভুটির পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে শেষ পর্যন্ত টিকে রয়েছেন তাঁর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তাঁদেরই একজন শেষ হাসি হাসবেন। ধারণা করা হচ্ছে, লিজ ট্রাস জয় পাবেন। স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম জানা যাবে।

এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো জ্বালানির দামে লাগাম টানা। কেননা, গরিব মানুষের জন্য জ্বালানি পণ্যের বাড়তি ব্যয় মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য তাঁদের অন্য খাতে ব্যয় কমাতে হচ্ছে।

বেন জারানকো, ইনস্টিটিউট ফর ফিসকাল স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ গবেষণা অর্থনীতিবিদ

২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিল বরিস জনসন। পরবর্তী দুই বছরের কিছু বেশি সময়ে তাঁকে করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা সামলাতে হয়েছে। এসবের প্রভাবে চরম সংকটে পড়েছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। দেশটিতে এখন মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে। খাবার ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। জীবনযাপনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাস–ট্রেন–বন্দরের শ্রমিকেরা ধর্মঘট করেছেন। ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম দুই বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমেছে।

যুক্তরাজ্যবাসীকে এখন সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে জ্বালানির বাড়তি দাম। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়া থেকে সরবরাহ কমে আসায় জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে। শীতে তা আরও বাড়বে। আগামী অক্টোবর নাগাদ দেশটিতে পরিবারপ্রতি গড় জ্বালানি ব্যয় বেড়ে ৪ হাজার ১০৬ ডলারে উন্নীত হতে পারে। জ্বালানির সরবরাহ দ্রুত নির্বিঘ্ন করতে না পারলে শীতে জমে অনেক মানুষ মারা যেতে পারেন বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন বিশ্লেষকদের অনেকেই।

লিজ ট্রাস ও ঋষি সুনাক—দুজনই এখন জনগণকে সমৃদ্ধ অর্থনীতির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন বরিস। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। তবে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য বরিসের দায় কতটা, তা তর্কসাপেক্ষ ব্যাপার।

সংকট শিগগিরই কেটে যাবে—এমন আশার কথা শোনাতে পারছে না কেউ। বরং উল্টোটাই হতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক অব ইংল্যান্ড’ বলেছে, মূল্যস্ফীতি ১৩ শতাংশ ছাড়াতে পারে। শীত মৌসুমে জ্বালানিসংকট আরও প্রকট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে সিটি গ্রুপের পূর্বাভাস, ২০২৩ সালের শুরুতে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি ১৮ শতাংশ ছাড়াতে পারে।

আরও পড়ুন

যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোট শেষ, ট্রাসের জয়ের সম্ভাবনা

যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোট শেষ, ট্রাসের জয়ের সম্ভাবনা

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক
ছবি: এএফপি

তাই যুক্তরাজ্যে শিগগিরই জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম কমে আসবে, এমনটা আশা করছেন না কেউই। ফেডারেশন অব স্মল বিজনেস ইউকের প্রধান মার্টিন ম্যাকটাগ বলেন, ‘আমি ভীত। ভালো কিছুর আশা করতে পারছি না।’ দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সতর্ক করে বলেছে, এভাবে চলতে থাকলে আগামী মাসগুলোয় যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি মন্দায় পড়বে।

লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ফিসকাল স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ গবেষণা অর্থনীতিবিদ বেন জারানকো বলেন, ‘এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো জ্বালানির দামে লাগাম টানা। কেননা, গরিব মানুষের জন্য জ্বালানি পণ্যের বাড়তি ব্যয় মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য তাঁদের অন্য খাতে ব্যয় কমাতে হচ্ছে।’

আরও পড়ুন

সুনাককে ছাড়া যে কাউকে সমর্থন দাও: মিত্রদের বরিস

যুক্তরাজ্যে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক (ডানে)

সংকট নিরসনে বরিসের ঘনিষ্ঠ ট্রাস সাধারণ মানুষের ওপর থেকে করের বোঝা কমানোর পক্ষে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে সর্বশেষ ভোটাভুটির পর তিনি বলেছিলেন, ‘আমার একটি দৃঢ় পরিকল্পনা আছে, যা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে। এতে উচ্চ মজুরি পাওয়া যাবে এবং দেশের প্রতিটি পরিবারের জন্য আরও বেশি করে নিরাপত্তা ও বিশ্বমানের জনসেবা নিশ্চিত করবে।’

তবে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, ট্রাসের নীতি বাস্তবায়িত হলে সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাবে। সংকট দূর হবে না, বৈষম্য বাড়বে। এ বিষয়ে লন্ডনের থিঙ্কট্যাংক রেজল্যুশন ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জোনাথন মার্শাল বলেন, ‘কর কমানোর সুবিধা পাবেন ধনী ব্যক্তিরা। তাঁদের হাতে আগে থেকেই প্রচুর অর্থ রয়েছে।’ তাঁর মতে, জনগণকে সাশ্রয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা, জ্বালানির অপচয় কমানোর মধ্য দিয়ে সংকট সামাল দেওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন

সরছেন বরিস, এরপর কী?

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন

লিজ ট্রাস ও ঋষি সুনাক—দুজনই এখন জনগণকে সমৃদ্ধ অর্থনীতির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন বরিস। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। তবে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য বরিসের দায় কতটা, তা তর্কসাপেক্ষ ব্যাপার। এখন দেখার বিষয়, সংকট নিরসনে বরিসের উত্তরসূরি কতটা সফল হতে পারেন।

আরও পড়ুন

গদি ছাড়ার আগে বিয়ের জমকালো পার্টি করতে চান বরিস

গত বছর অনেকটা গোপনীয়তার সঙ্গে ক্যারি সিমন্ডসকে বিয়ে করেন বরিস জনসন

সর্বশেষ - দেশজুড়ে