নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যা লিতে হামলা গুলি ও হত্যার অভিযোগ এনে জেলা পুলিশ সুপারসহ (এসপি) ৪২ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মোল্লার আদালতে এ আবেদন করা হয়। বিকালে ওই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যা লিতে হামলা গুলি ও হত্যার অভিযোগ এনে মামলায় জেলা পুলিশ সুপারসহ ৪২ জন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখসহ ১৫০ জন অজ্ঞাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন রুহুল কবির রিজভী
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালত শুনানি শেষে এদিন বিকালে রিজভীর ওই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মাসুদ তালুকদার বলেন, আমরা শুনেছি আদালত ২০৩ ধারায় আমাদের মামলার আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করব।
রিজভীর আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল- ১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডে আলী আহম্মদ চুনকা পাঠাগারের সামনে বিবাদীরা সরকারি দলের ইন্ধনে অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যা লিতে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-অঞ্চল) নাজমুল হাসানের নির্দেশে ডিবির এসআই মাহফুজুর রহমান কনক তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে যুবদল কর্মী শাওন আহম্মেদের (২১) বুকে গুলি করলে তিনি ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়লে ছাত্রদল নেতা শাওন আহম্মেদের বুক ঝাঁজরা হয়ে যায় এবং অন্যান্য নেতাকর্মীরা গুলিবিদ্ধ হন। ১১ জন সাক্ষী দেখিয়ে রিজভী আদালতে মামলার আবেদন করেন।
মামলার আবেদন শেষে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতন্ত্রের অধিকার সমাবেশ ও র্যা লি করার অধিকার। সেই অধিকারটা হরণ করা হয়েছে; এটা আমরা বারবার বলেছি। এটার প্রমাণ হচ্ছে ১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। তারা গণতন্ত্রের কোনো অধিকারই রাখতে চান না। আমরা বলেছি একদলীয় সরকারের যে নমুনা সেই নমুনা প্রকাশিত হয়েছে। আমরা শাওন হত্যায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
১০ নেতাকর্মীর রিমান্ড
নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় গ্রেফতার বিএনপির ১০ জনের বিরুদ্ধে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুর মোহসীনের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. আব্দুস সাত্তার (২২), মো. মজিবুর রহমান (৫২), রঞ্জন কুমার দেবনাথ (৩৬), রাজিব (৩৮), মো. জনি (৩৮), বাদল (৩৩), মো. আবুল কালাম ভূঁইয়া (৪৮), রিমন (২২), ইমন (১৮) ও সোহান (১৫)।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় করা শাওন হত্যা মামলায় ১০ জনকে গ্রেফতারের পর রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের প্রত্যেকের একদিনের করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান বাদী হয়ে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫ হাজার জন বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের ১৫ জন ও বিএনপির প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। নিহত হন শাওন নামে এক যুবদল কর্মী।
