দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হয় ২০১৬ সালের ১ জুলাই। ওইদিন রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় নব্য জেএমবির পাঁচ জঙ্গি ঢুকে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি ২২ জনকে হত্যা করেন। এছাড়া রাতভর জিম্মি করে রাখেন রেস্তোরাঁয় আসা বেশ কয়েকজন অতিথি ও স্টাফকে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে পার হওয়া সেই রাত শেষে ভোরে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ইউনিটের নেতৃত্বে পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ নামে অভিযান চালায়। ওই অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। উদ্ধার করা হয় হলি আর্টিসানে জিম্মি অবস্থায় থাকা দেশি-বিদেশি অতিথি ও স্টাফসহ ৩৫ জনকে।
ভয়াবহ এ হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতায় জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক দুর্বল করতে সক্ষম হলেও তাদের কার্যক্রম থেমে থাকেনি। বরং এরপর রাজধানীর কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ কয়েকটি এলাকায় বেশকিছু জঙ্গি হামলা হয়। একাধিক আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারান কিছু জঙ্গি। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধেও নিহত হন কয়েকজন। একই সঙ্গে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোরালো অভিযানে অসংখ্য জঙ্গি গ্রেফতার হন। গ্রেফতার এসব জঙ্গি সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও মাঝে মধ্যে জামিনে বেরিয়েছেন অনেকেই। নিয়মিত আদালতে হাজিরা দেওয়ার শর্তে জামিন পান এসব আসামি। তবে জামিনে বের হয়ে তাদের অনেকেই শর্তানুসারে আদালতে হাজিরা না দিয়ে পালিয়ে গেছেন। কেউ কেউ আবার একই ধরনের তৎপরতায় (জঙ্গিবাদে) জড়িত হওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, জামিন পাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। তবে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলার শীর্ষ আসামিদের জামিনে বেরিয়ে এসে নিয়মিত হাজিরা না দেওয়া এবং পলাতক থাকা উদ্বেগের। এ ধরনের ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা দেশের নাগরিকদের জন্য হুমকিস্বরূপ। জামিন নিয়ে এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার পুরোদমে জঙ্গিবাদে যুক্ত হচ্ছেন। চালাচ্ছেন সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম, করছেন সদস্য সংগ্রহ। এদেরই টার্গেট করে বা সামনে রেখে প্রচারণামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। এক্ষেত্রে তারা প্রশিক্ষণ ও ‘গ্রাউন্ড তৈরির’ ওপর বেশি জোর দিচ্ছে।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে এমন আসামিও গ্রেফতার হচ্ছেন, যারা আগেও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বা জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে কারাগারে ছিলেন। জামিনে বের হয়ে আবারও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন তারা। একই ধরনের মামলায় আবার গ্রেফতারও হয়েছেন। অর্থাৎ, কারাগার থেকে জামিনে বের হয়েও তারা আগের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি।
জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে গঠিত পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে জঙ্গিরা নিজেদের সদস্যদের বিভিন্ন আক্রমণের কলাকৌশল, বোমা তৈরির কৌশল ও ড্রোন হামলার কৌশল সম্পর্কে বেশি প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। যারা জামিনে বেরিয়ে আসছেন তাদের টার্গেট করেও জঙ্গি সংগঠনগুলো প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের ভূমিকা প্রশংসনীয়: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
জানা যায়, জঙ্গিবাদের ঘটনায় সাধারণত সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সাত মাসে ২২০ মামলায় আড়াই শতাধিক জঙ্গি কারাগার থেকে জামিন পেয়েছেন। তাদের অনেকেই জামিন নিয়ে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন না, অর্থাৎ তারা পলাতক। পলাতক থেকে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ধারণার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন সব কর্মকর্তা একমত নন। হাজিরা না দেওয়ার পেছনে জঙ্গিদের আর্থিক অসচ্ছলতাকেও কারণ হিসেবে মনে করছেন তারা।
জামিনে বেরিয়ে একই অপরাধে ধরা পড়ার ঘটনাও ঘটছে অনেক। গত ২১ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী থেকে হাফিজুর রহমান ওরফে সকাল নামে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) এক সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট।
হাফিজুর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ডাকাতির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতেন। পরে তা কারাগারে বন্দি জেএমবি সদস্যদের মুক্তির জন্য ও সংগঠনের কার্যক্রম বেগবান করতে ব্যয় করতেন। হাফিজুরের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক মামলা রয়েছে।
এর আগে গত ৩০ জুন জেএমবির পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি মো. মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসানকে (৩০) গ্রেফতার করে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। মেহেদী ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট রাত ১টার দিকে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা এলাকায় জেএমবির কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে নাশকতামূলক কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক করছিলেন। খবর পেয়ে স্থানীয় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালালে মেহেদী কৌশলে পালিয়ে যান। দীর্ঘ পাঁচবছর ধরে যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।
অবশ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের দাবি, বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। তবে শঙ্কা এখনো আনসার আল ইসলামকে নিয়ে। আন্তর্জাতিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার অনুসারী আনসার আল ইসলামকে ভারতীয় উপমহাদেশের আল-কায়েদার শাখা একিউআইএস (আল-কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট) হিসেবেও ধরা হয়। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, শীর্ষ পর্যায়ের জঙ্গিরা জামিনে বের হলে কারা কর্তৃপক্ষ সাধারণত সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ বা পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্যদের জানিয়ে জানায়। এরপর জামিন পাওয়া জঙ্গি সদস্যের ওপর নজরদারি করা হয়।
আরও পড়ুন: জঙ্গি কার্যক্রম যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে, তবে আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না
জঙ্গিদের জামিন প্রসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালে অনুরোধ জানানো হয়, সাধারণ চোর-ডাকাতদের মতো জঙ্গিদের যেন জামিন দেওয়া না হয়। জঙ্গিদের জামিন দিলে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। কারণ, চোর-ডাকাতদের মোটিভেশন আর জঙ্গিদের মোটিভেশন অনেক পার্থক্য রয়েছে।
২০১৪ ও ২০১৫ সালে দেশে বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলা হয়। এ সময় জঙ্গিরা তাদের কার্যক্রমে বেশ সক্রিয় ছিল। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কারণ দু-তিন বছরেই তাদের কার্যক্রম নস্যাৎ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটিটিসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, কয়েক বছর ধরে জঙ্গিদের কোনো অপারেশনাল কার্যক্রম নেই। এর মানে এই নয় যে, তারা থেমে আছে। তারা গোপনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আগে একটি জঙ্গি সংগঠনের দুজন বোমা তৈরির কাজ জানলে তাদের ধরা হলে সেই সংগঠনটি দুর্বল হয়ে যেত। তবে সেই সংগঠনের যদি ২০০ সদস্য বোমা তৈরিতে পারদর্শী হয় তাহলে কতজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে?
আরও পড়ুন: সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নিয়ে সব সময় উদ্বিগ্ন থাকি
জঙ্গিদের আকার-ইঙ্গিত পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, জঙ্গিরা তাদের সদস্যদের বলছে- প্রস্তুতি নিতে, দাওয়াত দিতে এবং গ্রাউন্ড তৈরি করতে। যাতে ঝড় এলে তা ঠেকানো যায়।
সিটিটিসির একটি সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গিরা অর্থ সংগ্রহের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি সংগঠনের নেতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যরা কারাগারে থাকার ফলে এবং জামিন নিতে ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে জঙ্গিরা অর্থ সংকটে পড়ছে। এজন্য তারা অর্থ সংগ্রহের দিকে ধাবিত হচ্ছে। কেউ কেউ আবার ডাকাতির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছে। এছাড়া জঙ্গিরা তাদের সদস্য বাড়াতে দাওয়াতি কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছে। সংগঠনের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হলে তাদের কার্যক্রম চালাতে সহজ হবে। যেসব জঙ্গি কারাগারে আছে তাদের জামিনে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অর্থ সংগ্রহ হচ্ছে যেভাবে
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সারাদেশ থেকে বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে অশিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত ও ধর্মান্ধ মুসলমানদের টার্গেট করে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছেন জঙ্গিরা। দু-তিন হাত ঘুরে সেই টাকা চলে যাচ্ছে জঙ্গি সংগঠনে। এসব জঙ্গি সংগঠনের অর্থ সংগ্রহকারীদের মাসিকভিত্তিতে বেতন দেওয়া হয়। অর্থ সংগ্রহকারীরা মাস শেষে বেতন হিসেবে বেশ বড় অঙ্কের টাকা পান। এসব সদস্য সংগঠনের বেতনভুক্ত কর্মচারী। যাদের অন্য কোনো পেশা নেই। তারা শুধু জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
জামিনে বেরিয়ে জঙ্গিদের বড় পরিকল্পনা
বিভিন্ন সূত্রে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, ভবিষ্যতে জঙ্গিদের বড় পরিকল্পনা রয়েছে। গোপনে সে অনুযায়ী তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যে পরিকল্পনা এক থেকে দুই বছরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এ কারণে দীর্ঘ মেয়াদে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় নিজেদের সদস্যদের কাছেও তা প্রকাশ করছে না জঙ্গি সংগঠনগুলো। বর্তমানে দাওয়াত, সদস্য সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ ও গ্রাউন্ড তৈরির ওপর বেশি জোর দিচ্ছে তারা।
অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, জামিনে বেরিয়ে জঙ্গিরা বড় কোনো পরিকল্পনা করছে- এমন তথ্য আপাতত নেই। তবে যারা এই পথের লোক তারা থেমে থাকবে না। এ বিষয়ে এটিইউ সচেতন আছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গিবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চলমান। এছাড়া যেসব জঙ্গি জামিনে বেরিয়ে এসেছে তাদের আমরা মোটিভেশন করছি। তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখছি। এরই মধ্যে এটিইউয়ের পক্ষ থেকে ‘ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ শীর্ষক বই প্রকাশ হয়েছে। এখন সাধারণ মানুষও অনেক সচেতন। দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভালো হলে ধীরে ধীরে জঙ্গিবাদ কমে আসবে।
র্যাবের গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, কোন পর্যায়ের জঙ্গিরা জামিনে বেরিয়ে পালিয়ে থাকছেন তা দেখার বিষয়। আসলে পালিয়ে থাকছেন ঠিক নয়, বিষয়টি হচ্ছে হয়তো তারা হাজিরা দিচ্ছেন না। হাজিরা না দেওয়ার কারণ তাদের আর্থিক বিষয়ও হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে থাকার ফলে অনেক জঙ্গির আর্থিক সামর্থ্য নাও থাকতে পারে। কিংবা আদালতে তার আইনজীবী ধরার বিষয় রয়েছে, তাদের ফি রয়েছে। এসব কারণে হয়তো অনেকেই নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন না।
তিনি বলেন, জামিনে থাকা জঙ্গিদের নিয়মিত মনিটরিং করে র্যাব। একই সঙ্গে তাদের ডি-র্যাডিক্যালাইজেশনের (উগ্রপন্থা থেকে সরে আসার) কাজ চলমান। জামিনে বের হয়ে এসে যাতে নতুন করে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তে না পারে বা সংগঠিত হতে না পারে, সে বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। একটা বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, র্যাবই প্রথম জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে।
এটিইউ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. কামরুল আহসানে জাগো নিউজকে বলেন, যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে দেশ অনেক বেশি নিরাপদ। জামিন দেওয়া আদালতের এখতিয়ার। যেসব জঙ্গি জামিন নিয়েছেন তাদের মনিটরিং করা হয়। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে এটিইউ গ্রেফতার করেছে, যারা পলাতক ছিলেন। যদি কোনো জঙ্গি পলাতক থাকেন তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যুর পর গ্রেফতার করা হবে।
আরও পড়ুন: জামিন নিয়ে ৪৪০ ‘জঙ্গি’র বিদেশ পাড়ি
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, সম্প্রতি জঙ্গিদের ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া ও সিক্রেট গ্রুপ মনিটরিংসহ জঙ্গি সংগঠনগুলোকে নজরদারির মাধ্যমে জানা যায়, বর্তমানে তারা নিজেদের সদস্যদের বিভিন্ন আক্রমণের কলাকৌশল, বোমা তৈরির কৌশল ও ড্রোন হামলার কৌশল সম্পর্কে বেশি প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা জামিনে বেরিয়ে আসছেন তাদের টার্গেট করেও জঙ্গি সংগঠনগুলো প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। জামিনে বেরিয়ে এসে যারা হাজিরা দিচ্ছেন না, তাদের অনেকেই সংগঠনের সঙ্গে আবারও সম্পৃক্ত হচ্ছেন।
জামিনে বেরিয়ে আসা জঙ্গিদের প্রচার-প্রচারণা বেশি প্রভাবিত করবে বলে মনে করেন সিটিটিসি প্রধান।
অতিরিক্ত আইজিপি মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, সিটিটিসির ধারাবাহিক অভিযান ও তৎপরতায় জঙ্গিরা কোণঠাসা। কিন্তু ‘লোন উলফ’ (একাকী নিজে থেকে পরিকল্পনা করে হামলা করা) হামলার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।