মুরগির খামারে মাছির কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু ছড়ায়। অনেক সময় এতে অনেক মুরগি মারা যায়। বিভিন্ন কারণে খামারে মাছির উপদ্রব দেখা দেয়। মাছি ১৬-৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় বেশি বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ১২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার নিচে এদের বংশবৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এরা সক্রিয় হয় এবং বংশবৃদ্ধি ঘটায়। তবে ৪৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপর তাপমাত্রায় মাছির ডিম ও লার্ভা মারা যায়।
খামারে মাছির উপদ্রবের জন্য লিটার অব্যবস্থাপনা অনেকাংশে দায়ী। যেমন, ভেজা, স্যাঁতস্যাতে লিটার, দলা পাকানো লিটার ও পুরাতন লিটার খামারের পাশে রাখা। অন্যদিকে পূর্বের ফ্লকের লিটার নতুন ফ্লকে ব্যবহার করা। লিটার ট্রিটমেন্ট না করে ব্যবহার করা। নিয়মিত লিটার উলোট-পালোট না করা। বাতাসে অত্যাধিক আদ্রর্তা থাকা। বিশেষ করে বর্ষাকালে বাতাসে জলীয়বাষ্প বেশি থাকার কারণে লিটার সহজেই স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। যা মাছি উৎপাদনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে।
এ ছাড়াও খামারের কাছাকাছি পচনশীল বস্তু থাকলে যেমন, মরা মুরগি খামারের কাছাকাছি ফেলে রাখলে, বিভিন্ন ফলের খোসা, ফলের অবশিষ্টাংশ খামারের কাছাকাছি ফেললে মাছির উপদ্রব বেড়ে যায়। মুরগির পায়খানা নিয়মিত পরিষ্কার না করলে। মুরগি পাতলা পায়খানা করলে খামারে মাছি বেড়ে যায়। কক্সিডিওসিস হলেও খামারে মাছি বেড়ে যেতে পারে।
এজন্য জেনে নিতে হবে মাছির উপদ্রব হলে তাড়ানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে। লিটার পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে। ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁতে লিটার দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে। মৃত মুরগি খামার থেকে দূরে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। মুরগির পায়খানা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। খামারের চারপাশ পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখতে হবে। এবং নিয়মিত চুন, ব্লিচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।
খামারে মাছির উৎস খুঁজে বের করতে হবে এবং তা ধ্বংস করতে হবে। পূর্বের ব্যাচের লিটার খামারে আশে পাশে না রেখে দূরে কোথাও ফেলে আসতে হবে।
খামারের চারপাশে তারপিন তেল স্প্রে করা যেতে পারে। এটা মাছি তাড়াতে সাহায্য করবে। ইনসেক্টিসাইড সম্বলিত বিভিন্ন প্রিপারেশন পাওয়া যায় এগুলো নির্দিষ্ট মাত্রায় খামারের চারপাশে ছিটিয়ে দিলে মাছি (প্রাপ্তবয়স্ক) মারা যায়।
এছাড়া সাইরোমাজিন সম্বলিত বিভিন্ন প্রিপারেশন আছে যেগুলো খাদ্যের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়। এগুলো ব্যবহার করলে মাছির ডিম ও লার্ভা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এছাড়া লিটারে অ্যামোনিয়া রিডিউসারও ব্যবহার করতে পারেন। এতে কিছুটা হলেও মাছির উপদ্রব কমে। মুরগির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে খামার মাছিমুক্ত রাখতে হবে।