ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার শ্রেণি শিক্ষককে বদলি করাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মারধর ও মা-বাবাকে গালাগাল করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন অভিভাবকের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৭ সেপ্টম্বর) প্রতিষ্ঠানটির বসুন্ধরা শাখার প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে ফাবলিহা বুশরা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আপনার বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। আমরা সবাই গতকাল মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলাম। সবাই দেখেছি বিদ্যালয়ে কী অনিয়ম হয়েছে। আমাদের ছাত্রীদের সঙ্গে ব্যাপক অন্যায় করা হয়েছে। গায়ে হাত তোলা হয়েছে। মা-বাবার নাম ধরে বাজে ভাষায় গালি দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে চরম খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘যেসব অভিভাবক ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন তাদের একটি তালিকা আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে শাখা প্রধানকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার অনুরোধ জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।’
এ বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার প্রধান জগদীস পাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আবু সুফিয়ানের বদলি বাতিলে গতকাল মঙ্গলবার অভিভাবকরা আমার রুম ঘোরাও করে অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে তারা গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় দশম শ্রেণির মেয়েরা বাধা দিতে এলে কিছু অভিভাবক তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন বলে জানতে পেয়েছি। সে ঘটনার বিচার চেয়ে মেয়েরা আবেদন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখা আমার প্রধান কাজ। বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানানো হবে। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাই বাস্তবায়ন করা হবে। তবে আবু সুফিয়ানের বদলির বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। অথচ আমার ইচ্ছায় নাকি তাকে বদলি করা হয়েছে এমন গুজব ছড়িয়ে অভিভাবকদের ক্ষিপ্ত করে তোলা হয়েছিল।’
জানা গেছে, শিক্ষক আবু সুফিয়ানকে বদলি করে আজিমপুর শাখায় পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হলে সে তথ্য অভিভাবকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। শাখা প্রধান জগদীস পালের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হওয়ায় তাকে বদলি করা হয়েছে এমন অভিযোগে বদলির আদেশ বাতিল করে তাকে বসুন্ধরা শাখায় রাখতে অভিভাবকরা স্কুলে জড়ো হয়ে গতকাল (মঙ্গলবার) বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে অভিভাবক-ছাত্রীরা একত্রিত হয়ে শাখা প্রধানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। ঘণ্টাখানেক পর খুলে দেওয়া হলেও জগদীস পালকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। দিনভর বিক্ষোভের পর রাতে এ আদেশ বাতিল করা হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
একাধিক শিক্ষক জানান, আবু সুফিয়ান নিজ বাসায় ভিকারুননিসার বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রীদের ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়ান। করোনা মহামারিতে বিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন ব্যাচ করে পড়াতেন। বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শাখা প্রধান জগদীস পালের সুপারিশে এই শিক্ষককে সতর্ক করে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছিল বলেও জানান তারা।