মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রধান প্রবেশপথে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল বিরল উদ্ভিদ ‘আফ্রিকান টিকওক’। গাছটি মারা গেছে।
বন বিভাগ জানায়, এ উদ্যানে দুটি বিরল প্রজাতির আফ্রিকান উদ্ভিদ ছিল। রেললাইনের পাশে থাকা গাছটি আগেই ঝড়ে উপড়ে যায়। উদ্যানের প্রধান প্রবেশ পথে দাঁড়িয়েছিল আরেকটি আফ্রিকান টিকওক।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাছটির সম্পূর্ণ পাতা ঝরে পড়েছে। গোঁড়ায় পচন দেখা দিয়েছে। প্রায় ৮ফিট গোলাকার আফ্রিকান টিকওক গাছের উচ্চতা প্রায় ৮০ ফুট। উদ্যানে আসা পর্যটকদের আকর্ষণ ছিল বিরল গাছটি।
লাউয়াছড়া বনের বিট কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ও একই উদ্যানের সাবেক বিট কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ জানান, বৃষ্টি মৌসুমে হঠাৎ বিরল প্রজাতির উদ্ভিদটির পাতা ঝরে পড়েছে। গাছটির গোঁড়ায় পচন সৃষ্টি হয়েছে। যা দেখে ধারণা করা হচ্ছে গাছটি মারা গেছে।
কমলগঞ্জের পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী স্বপন আহমদ বলেন, ‘আফ্রিকান টিকওক গাছটি প্রায় শত বছরের পুরনো। কয়েকশত ফুট ওপরে ডালপালা মেলে দাঁড়িয়ে ছিল। কালের সাক্ষী হয়ে ছিল গাছটি। মারা যাওয়ায় খুব খারাপ লাগছে।’
ইকো ট্যুরিস্ট গাইড ও পরিবেশকর্মী মো. আহাদ মিয়া বলেন, ‘লাউয়াছড়ায় আসা পর্যটকদের এ গাছ সম্পর্কে ব্রিফিং করলে খুবই আকৃষ্ট হতেন এবং গাছের সঙ্গে ছবি তুলে রাখতেন স্মৃতি হিসেবে। কিন্তু একমাত্র বিরল গাছটি মারা যাওয়ায় কষ্ট পেয়েছি।’
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘লাউয়াছড়া উদ্যানে দুটি আফ্রিকান টিকওক উদ্ভিদ ছিল। একটি গাছ অনেক আগেই মারা গেছে, যে গাছটি ছিল সেটিও মারা যাওয়ার পথে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিউটকে (বিএফআরআই) জানিয়েছি। গাছটি মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে অনেকেই ধারণা করছেন গাছটির বয়স সীমা পার হয়েছে, কেন না একটা সময় উদ্ভিদ কিংবা প্রাণীর জীবন চক্রের প্রাকৃতিক ভাবে সমাপ্তি ঘটে।’