‘আমরা আজ মানবেতর জীবন-যাপন করছি, আমরা কেউ মানসিকভাবে ভালো নেই। যেখানে ডাক্তার হয়ে অন্যকে ভালো রাখার ব্রত নিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম, সেখানে আজ আমরা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কেয়ার মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ওহিয়া ফারজিন। এসময় তিনি তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হতাশা প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনটি করা হয় কেয়ার মেডিকেল কলেজের ‘অব্যবস্থাপনা’র অবসান ও দ্রুত ১৪২ শিক্ষার্থীর মাইগ্রেশনের দাবিতে।
শিক্ষার্থী ওহিয়া ফারজিন বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির কাছ থেকে আমরা প্রতিনিয়ত আশ্বাস পেয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। নিরুপায় হয়ে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করেছি। সেই আন্দোলনের একটি অংশ হিসেবেই সাংবাদিকদের সামনে আসা।
সরকারের নীতিমালা মেনে কেয়ার মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন জানিয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, ভর্তির পর জানতে পারি এ মেডিকেল কলেজের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন নেই।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে জানার পর আমরা স্বাভাবিকভাবে কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেই সমস্যা সমাধানের জন্য। কর্তৃপক্ষ সমস্যার সমাধান না করে আমাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। যেহেতু তারা বুঝতে পারে এটি আমাদের জীবন-মরণ সমস্যা এবং আমাদের মেডিকেল ছেড়ে অন্য কোনো পেশায় যাওয়া সম্ভব না, ফলে তারা আমাদের পুঁজি করে কলেজে বারবার ভর্তি বাণিজ্য চালিয়ে যায়।
বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, এ অবস্থায় নিয়মানুযায়ী বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল অনুমোদিত অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। আমরা এমন একটি পর্যায়ে চলে এসেছি, যেখান থেকে আমাদের পক্ষে মেডিকেল কলেজ ছাড়া অন্য কোথাও ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগ করা হয়, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোগীশূন্য হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে কলেজের স্টাফ, শিক্ষক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় এবং হুমকি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কেয়ার মেডিকেল কলেজের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।