রাজবাড়ী সদরের মজলিসপুর গ্রামের পাট ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন হত্যা মামলায় তিন আসামিকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। আসামি পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান ও আইনজীবী মিন্টু কুমার মন্ডল। পলাতক মিন্টু শেখের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী শফিকুল ইসলাম।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত জানান, ঘটনার সময় আসামিদের বয়স কম ছিল- এ বিবেচনায় দণ্ড কমিয়েছেন আদালত। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার জন্য এরই মধ্যে নোট দেওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ মুসরাত জেরীন এ মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল আবেদন করেন। ওই আপিল শুনানি নিয়ে এ রায় দেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন- মো. জামির আলী ওরফে জাবের, মো. এনামুল কবির ওরফে এনামুল কাজী ও মিন্টু শেখ। এদের মধ্যে মিন্টু শেখ পলাতক।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০১০ সালের ২০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজবাড়ী জেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের মসলিসপুর গ্রামের ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
আদালত সূত্র ও মামলার বিবরণে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০১০ সালের ২০ অক্টোবর ফরিদপুর সদর উপজেলার খলিলপুর বাজারে ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন পাট বিক্রি করে বাড়ি ফিরছিলেন। সদর উপজেলার বারোখাদা ব্রিজের কাছে পৌঁছালে আসামিরা গিয়াসউদ্দিনের পথ আটকান।
পরে জামির আলী, এনামুল কবির ও মিন্টু শেখ চাপাতি ও রামদা দিয়ে গিয়াস উদ্দিনকে কুপিয়ে আহত করেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে এসে গিয়াসউদ্দিনকে উদ্ধার করেন। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। আসামিরা জেলা সদরের ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
একই দিন গিয়াসউদ্দিনের স্ত্রী শিউলি বেগম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।