বান্দরবানে অপহরণের পর হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে এলাহী ভূঁইয়ার আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- উচিংনু মারমা (২২), উবা চিং মারমা (৩০), চিংনু মং প্রকাশ হদা (২৩), মংনুমং প্রকাশ মংনু (৫০) এবং মংথু প্রকাশ মং ক্যাসিং মারমা। আসামিদের প্রথম ৪ জন সদর উপজেলার লুলাইন হেডম্যানপাড়ার এবং শেষেরজন লুলাইন পুনর্বাসনপাড়ার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় প্রধান আসামি উচিংনু মারমা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
আদালত ও আইনজীবী সূত্র জানা যায়, রোয়াংছড়ি উপজেলার খানসামাপাড়া থেকে চট্টগ্রামের চন্দ্রনাইশের গরু ব্যবসায়ী ছোট্ট মিয়াকে (৪৫) অপহরণ করে গলা কেটে হত্যা করে লাশ হ্লাপাইক্ষ্যং মৌজার সারাম্রাং ঝিরিমুখে মাটিচাপা দেয় আসামিরা। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মো. আমজু মিয়া বাদী হয়ে বান্দরবান সদর থানায় ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ প্রধান আসামি উচিংনু মারমাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামি হত্যার ঘটনা স্বীকার করে সম্পৃক্ত বাকি ৪ আসামির তথ্য দেন।
দীর্ঘ দিন মামলাটি আদালতে চলার পর সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অপরাধের সাক্ষ্য প্রমাণ অপসারণ করায় আরও ৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান জানান, ভিকটিম ছোট্ট মিয়া চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার দিয়াকুল এলাকার মৃত আনু মিয়ার পুত্র। গরু কিনতে এসে রোয়াংছড়ি উপজেলার খানসামা বাজার থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রধান আসামি উচিংনু মারমা বর্ণনামতে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে ভিকটিম ছোট্ট মিয়ার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেন। ওই দিন নিহতের ভাই মো. আমজু মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ইকবাল করিম বলেন, হত্যা মামলাটি দীর্ঘ ১৫ বছর আদালতে চলমান ছিল। বিভিন্ন সাক্ষীদের বক্তব্য, আসামির স্বীকারোক্তি ও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত হত্যাকারী ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং প্রত্যেককে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।