লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিন পাটওয়ারীকে হত্যার ঘটনায় শনিবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৫টা পর্যন্তও মামলা হয়নি। হত্যার কারণসহ কারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি কেউ। এদিকে নিহতের ময়নাতদন্তের পর পৃথক দুটি নামাজে জানাযা শেষে তার মরদেহটি বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
অন্যদিকে জেলা আওয়ামীলীগ এ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে বিএনপিকে দায়ী করছেন, প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। অপরদিকে জেলা বিএনপি অভিযোগ প্রত্যাখান করে আওয়ামীলীগের অভ্যান্তরীণ কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারে এ হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেন। জেলা পুলিশ সুপার বলছেন পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন মামলা দেয়া হয়নি। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।
জানা যায়, শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত অবস্থায় যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিনকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজন ও এলাকাবাসী। রাত ১১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের রশিদপুর পোদ্দার দিঘীর পাড় এলাকায় মুঠোফোনে কথা বলছিলেন আলাউদ্দিন। হঠাৎ তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ী গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার বুকে ও কানে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয় এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।
এদিকে খবর পেয়ে রাতেই লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপিসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি’কে দায়ী করে প্রতিবাদে রাতে ও দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা।
পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফসহ পুলিশ কর্মকর্তারাও ছুটে যান হাসপাতালে। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তারা। নিহতের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
নিহত আলাউদ্দিন একই এলাকার হামিদ উল্যাহ পাটওয়ারী বাড়ীর সাদেক পাটওয়ারীর ছেলে ও বশিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
এদিকে শনিবার বাদ জোহর শহরের এন আহম্মদীয়া স্কুল মাঠে ১ম নামাজে জানাযা আদায় করা হয়। পরে বাদ আছর নিজ এলাকায় ২য় জানাযা আদায় করে আলাউদ্দিনের মরদেহ তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। ১ম নামাজে জানাযায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে বলেন, যেসব বিএনপি নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্য অস্ত্র নিয়ে এর আগে ঘোরাফেরা করেছিল তারাই এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। এ খুনি চক্রকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। পরে নিহতের বাড়ীতে গিয়ে পরিবারকে তিন লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
অপরদিকে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান আওয়ামী লীগের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপি হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে নিজেদের অভ্যান্তরীণ কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এ নেতা।
জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, নিহত আলাউদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো মামলা দেয়া হয়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে, পুলিশের একাধিক টিম জড়িতদের খুঁজছে।