রবিবার , ২ অক্টোবর ২০২২ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

বছরে ঢাকার ক্ষতি প্রায় ৬০০ কোটি ডলার

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
অক্টোবর ২, ২০২২ ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ

প্রতিবেদন অনুযায়ী, উচ্চতাপের কারণে অন্য যেকোনো শহরের তুলনায় ঢাকার মানুষের শ্রম উৎপাদনশীলতা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাপমাত্রা কমাতে উদ্যোগ না নিলে ২০৫০ সাল নাগাদ এই ক্ষতি ১০ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সেসের অধ্যাপক আশরাফ দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের একাধিক প্রতিবেদনে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াসহ তপ্তদ্বীপ এলাকা সম্প্রসারণের চিত্র উঠে এসেছে। যেখানে তাপমাত্রা কেন্দ্রীভূত হয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। তাপমাত্রা কমানোর জন্য শহরে জলাভূমি রক্ষা, সবুজ গাছপালার সংখ্যা বাড়ানো, বায়ুপ্রবাহের জন্য পরিকল্পিত নগরায়ণ না করলে এই ক্ষতি সামনের দিনে আরও বাড়বে।’

প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জীবন, কিছুটা কমতে পারে তাপ

প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জীবন, কিছুটা কমতে পারে তাপ

ঢাকা ছাড়া বাকি ১১টি শহর হলো—এথেন্স (গ্রিস), ব্যাংকক (থাইল্যান্ড), বুয়েন্স এইরেস (আর্জেন্টিনা), ফ্রিটাউন (সিয়েরা লিওন), লন্ডন (যুক্তরাজ্য), লস অ্যাঞ্জেলস (যুক্তরাষ্ট্র), মিয়ামি (যুক্তরাষ্ট্র), মন্টেরেই (মেক্সিকো), নয়াদিল্লি (ভারত), সান্তিয়াগো (চিলি) ও সিডনি (অস্ট্রেলিয়া)। ১২টি শহরে ২০২০ সালে গড় ক্ষতির পরিমাণ ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। তাপমাত্রা কমাতে ব্যবস্থা না নিলে ২০৫০ সাল নাগাদ এই ক্ষতির পরিমাণ ৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলার হতে পারে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা শহরের ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ এলাকা ইতিমধ্যে উচ্চ তাপমাত্রা-আর্দ্রতার আওতায় এসে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার তাপ তার নগরকেন্দ্রে কেন্দ্রীভূত। তার মধ্যে কিছু অনানুষ্ঠানিক বসতি এলাকা রয়েছে। এসব এলাকায় জনঘনত্ব বেশি। অন্যদিকে সবুজ পরিসরের অভাব রয়েছে। ঢাকায় এ ধরনের এলাকা বাড়ছে। শহরের এই এলাকাগুলোর তাপমাত্রা পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চলের চেয়ে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

এমন গরম কদিন, জানাল আবহাওয়া অফিস

আবহাওয়া অধিদপ্তর

বেশি তাপমাত্রা রয়েছে, এমন এলাকার উদাহরণ হিসেবে ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের কথা বলা হয়েছে। এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ। এখানকার ঘরবাড়িগুলোর ছাদ টিন দিয়ে তৈরি। ফলে এই এলাকার তাপমাত্রা কাছাকাছি এলাকার তুলনায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এলাকাটিতে ঘরের ভেতরে আরও বেশি তাপ অনুভূত হয়। বসবাসের এই ধরনের পরিস্থিতি ঢাকাবাসীর উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় শ্রমনিবিড় অর্থনৈতিক তৎপরতা বেশি। তাপমাত্রা কমানোর ব্যবস্থা এখানে কম। ফলে ঢাকা উচ্চতাপের প্রভাবের জন্য অস্বাভাবিক ঝুঁকিপূর্ণ। নিম্ন আয়ের কর্মীরা বিশেষভাবে উচ্চতাপের সংস্পর্শে আসে। তারা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত হয়। অনিয়ন্ত্রিত উষ্ণায়নের কারণে তৈরি পোশাক, পরিবহন ও খুচরা ব্যবসা খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে প্রায় চার লাখ হকার রয়েছেন। যাঁদের বড় অংশ গ্রাম থেকে শহরে এসেছেন। শ্রমিক হিসেবে তাঁদের দক্ষতা কম। বেশির ভাগ হকারের কোনো স্থায়ী দোকান নেই। তাঁরা মূলত ফুটপাতে উন্মুক্ত স্থানে নানা ধরনের পণ্য বিক্রি করেন। জরিপমতে, তাপপ্রবাহ চলার সময় ৯ শতাংশ হকার ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ আয় হারান। আর প্রায় ২৫ শতাংশ হকার ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ আয় হারান।

চরম গরমে নারীরা বেশি ঝুঁকিতে: গবেষণা

স্পেনে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ চলছে, মাথায় ব্যাগ ধরে রোদ থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন একজন নারী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আখতার মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের শহরের ভবনগুলোতে কংক্রিটের পরিমাণ কমাতে হবে। ভবনের ছাদে বাগান ও সবজি চাষ করতে হবে। এগুলো তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বেশ কিছু ভবনের ছাদে এক ধরনের রং ব্যবহার করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা ও নিম্নমানের বসতির ভেতরের তাপমাত্রা আট ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমেছে। যানবাহনে সবুজ ছাদের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য গবেষকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন।

সর্বশেষ - সারাদেশ