বুধবার , ১৯ অক্টোবর ২০২২ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

শুরুতে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
অক্টোবর ১৯, ২০২২ ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

সপ্তাহের প্রথম তৃতীয় কার্যদিবস টানা দরপতনের পর চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেইসঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। তবে লেনদেনে কিছুটা ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।

প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৪২ পয়েন্ট। আর লেনদেনে হয়েছে ৩০০ কোটি টাকার কিছু বেশি।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দাম কমার তুলনায় দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০টা ৪৪ মিনিটে ডিএসইতে ১১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩টির। আর ১৯২টির দাম অপরিবর্তিত।

এতে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৩৬ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ৯ পয়েন্ট। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়েছে। এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭১ কোটি টাকা।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১১ পয়েন্ট কমেছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১১৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৬টির, কমেছে ১২টির এবং অপরিবর্তিত ৪৭টির।

এর আগে সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হয়। এতে তিন কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ৯৪ পয়েন্ট পড়ে যায়।

এই দরপতনের বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, অবশ্যই বিশ্বমন্দার একটা প্রভাব আমাদের শেয়ারবাজারে পড়েছে। বিশ্বমন্দা ইতোমধ্যে এসে গেছে। মূল্যস্ফীতি সারা বিশ্বজুড়ে অনেক বেড়ে গেছে। কাজেই আমাদের রপ্তানি পারফরম্যান্স সেখানে কমে গেছে। আমাদের দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে চলে গেছে। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবৃদ্ধির হার কমার আভাস দিয়েছে। এসব কারণে বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি এখনো বাংলাদেশের পরিস্থিতি পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো। কাজেই খুব বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে, বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধরে রাখা উচিত। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে বাজার ভালো হবে। আর বিক্রি কম হলে দরপতন কম হবে।

আরেক শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, অর্থনীতির মন্দা দেখা দিলে শেয়ারবাজারে তার প্রভাব পড়বেই। শেয়ারবাজার আলাদা কিছু না। অর্থনীতি চাঙ্গা থাকলে শেয়ারবাজার চাঙ্গা থাকে। অর্থনীতি থেকেই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো তাদের আয় আহরণ করে। অর্থনীতির গ্রোথ যদি ঋণাত্মক হয়, তাহলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আয়ও কমে যায়। এটাই নিয়ম।

তিনি বলেন, সব দেশেই শেয়ারবাজারে কারেকশন (মূল্য সংশোধন) হচ্ছে। কোনো কোনো দেশে ৪০-৫০ শতাংশ পড়ে গেছে। আমাদের দেশের এখন যে দরপতন হচ্ছে এর পিছনের মূল কারণ আসন্ন বিশ্বমন্দা। ইতোমধ্যে ১৮০টি কোম্পানির শেয়ার দাম ফ্লোর প্রাইসে চলে এসেছে। এগুলোর খুব একটা লেনদেন হয় না। বাকিগুলোর মধ্যে কয়েকটা নিয়ে খেলাধুলা করছে, এগুলোর দাম এখন ধরে রাখতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, মন্দা এবং শঙ্কা সবকিছু মিলেই শেয়ারবাজারে দরপতন হচ্ছে। মূল কথা হলো মানুষ সামনের কথা চিন্তা করে। প্রবৃদ্ধি কমবে এটা শুধু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট থেকে না, আমরা নিজেরাও টের পাচ্ছি। যদি লোডশেডিং চলতে থাকে, ৫ ঘণ্টা কারখানা বন্ধ থাকে, তাহলে কারখানা তো আগের মতো কাজ করবে না। আমাদের রপ্তানি করার ক্ষমতা কমে যাবে। এটা হয় তো মানুষ চিন্তা করছে। তাছাড়া এখানে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করার মতো মানুষ আমি দেখতে পারছি না।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ)-এর সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও জাগো নিউজকে বলেন, সব মহল থেকেই বিশ্বমন্দার কথা আসছে। সরকারের ওপর থেকেও একই কথা আসছে। অবশ্যই সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে দরপতনের জন্য এটি একটা বড় কারণ। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের জমা করা চেক নগদায়ন না হওয়া পর্যন্ত শেয়ার কেনা যাবে না মর্মে বিএসইসি একটা নির্দেশনা দিয়েছে। এটাও প্রভাব ফেলেছে। এ দু’টা মিলেই শেয়ারবাজারে দরপতন হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কি করা উচিত? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ডিবিএ’র পক্ষ থেকে আমরা আগেও বলেছি এবং এখন আবার বলছি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঋণ করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা উচিত না। আবার পুঁজির সম্পূর্ণ অংশও বিনিয়োগ করা উচিত না। পুঁজির ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগ করে ২৫ শতাংশ রেখে দেওয়া উচিত। যাতে যখন দাম কমে যায়, তখন কিনে সমন্বয় করা যায়। পাশাপাশি আমাদের পরামর্শ থাকবে যেসব কোম্পানি ভালো লভ্যাংশ দেয় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেই সব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে