ভারতে এখন পর্যন্ত ২০০ কোটির বেশি কোভিড টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ টিকার অন্তত দুই ডোজ নিয়েছেন। গত জানুয়ারি থেকে ভারতে স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। একই সঙ্গে যাঁরা আগে থেকে অন্য রোগে আক্রান্ত এমন ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিরাও বুস্টার ডোজ পেতে শুরু করেন। এরপর দেশটির সরকার প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করে।
ভারত স্বাধীন হওয়ার ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে জুলাইয়ে ৭৫ দিনব্যাপী বিনামূল্যে সব প্রাপ্তবয়স্কদের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করে সরকার। তবে ভারতে টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার হার অনেক কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এখন পর্যন্ত বুস্টার ডোজ হিসেবে ২৯ কোটি ৯০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার উন্নয়নশীল দেশগুলোর টিকা উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর জোট ডিসিভিএমএন-এর বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুনে শহরে। সেখানে কোভিশিল্ড টিকার ১০ কোটি ডোজ ধ্বংস করার কথা জানান সেরামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা। পুনাওয়ালা সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানুষজন এখন করোনাভাইরাস নিয়ে বিরক্ত। তাই করোনার টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার কোনো চাহিদাও নেই। সত্য কথা বলতে গেলে আমিও বিরক্ত।’
পুনাওয়ালার দেওয়া হিসাবে, সেরামের কাছে তাদের তৈরি ১০ কোটি ডোজ কোভিশিল্ড টিকার মজুত ছিল। এসব টিকার মেয়াদ ছিল নয় মাস। গত সেপ্টেম্বরে টিকার মেয়াদ শেষ হয়। এরপর এসব টিকা ধ্বংস করতে বাধ্য হয় তারা। টিকা উৎপাদকদের সভায় পুনাওয়ালা বলেন, ‘মানুষজন প্রতি বছর ভাইরাসজনিত অন্য টিকার সঙ্গে কোভিডের এক ডোজ টিকা নিতে পারেন। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর মতো ভারতে প্রতি বছর ভাইরাসজনিত অন্য রোগের টিকা নেওয়ার চল নেই।’
পুনাওয়ালা আরও বলেন, বুস্টার ডোজ হিসেবে করোনার টিকা কোভোভ্যাক্সের ট্রায়াল শেষ করেছে সেরাম। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই টিকা ব্যবহার করার অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্সের সঙ্গে যৌথভাবে করোনার অমিক্রন ধরনের জন্য বিশেষ এই বুস্টার ডোজ তৈরি হচ্ছে।