সরকারের ভেতরে পতনের ভয় ঢুকেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ওরা (আওয়ামী লীগ) স্বৈরাচারের যে শৃঙ্খলা তৈরি করেছে সেটা ভেঙেই মানুষ এখন রাজপথে উপচে পড়ছে। তাদের পতনের ধ্বনি তারা শুনতে পাচ্ছে না। আর শুনতে পেলেও অগ্রাহ্য করছে। তারা বিরোধী দলকে যে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে, চিৎকার করছে- এটা তাদের পতনের ভয় ছাড়া আর কিছুই না।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মানব সেবা সংঘ আয়োজিত ‘মুক্তির পংক্তিমালা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আগামীকাল (শনিবার) খুলনাতে বিএনপির পক্ষ থেকে জনসমাবেশ। ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ নানা ধরনের কথা বলছেন। হাছান মাহমুদ বলছেন, জব্বারের বলি খেলায় যত লোক হয় বিএনপির সমাবেশে তত লোক হয় না। আবার ওবায়দুল কাদের বলছেন, লাখ খানিকের মতো মানুষ হবে এটা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি। তবে ওরা (বিএনপি) যদি ঢাকাতে ১০ লাখ লোক জড়ো করে আমরা ৩০ লাখ লোক জড়ো করবো।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের নিয়ে এত তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন, তাহলে আবার আমাদের জনসমাবেশ পথে পথে বাধা দিচ্ছেন কেন? শ্রমিক ইউনিয়ন,পরিবহন মালিক সমিতিকে দিয়ে ধর্মঘট ডাকিয়েছেন কেন?
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অংশ হচ্ছে সমাবেশ করা, মিছিল করা, সমালোচনা করা। কিন্তু ওদের জেনেটিক্যালি হচ্ছে এক ধরনের জমিদারি শাসন নাৎসিবাদের শাসন ধারণ করে বলেই প্রতিপক্ষের কোনো অধিকার তারা কখনো স্বীকার করেনি। আর স্বীকার করেনি বলে যখনই তারা ক্ষমতায় এসেছে তখনই প্রতিপক্ষকে হত্যা, গুম, মিছিল-সমাবেশে বাধা দিয়েছে। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। আওয়ামী লীগের শাসনের ঐতিহ্য।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ছাত্রদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, আপনারা যদি এতই বাহাদুর তাহলে সমাবেশ বানচাল করার জন্য নিজের লোকদের দিয়ে ধর্মঘট ডাকাচ্ছেন কেন? বাংলাদেশের মানুষ কি এতই বোকা? এতই বেকুব যে শ্রমিক ইউনিয়ন, পরিবহন মালিক সমিতি কারা কার নির্দেশে চলে এটা জানে না? এটা সবাই জানে।
রিজভী বলেন, আসল ঘটনা হলো সরকার জানে তাদের কোনো গণভিত্তি নেই। তাই রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যেভাবেই হোক বিরোধীদলের সমাবেশ পণ্ড করতে চায়। এ কারণে যত প্রকার পরিবহন আছে সব বন্ধ করে দিয়েছে। অলিখিত হরতাল সেখানে জারি করেছে। তারপরেও ট্রেন বোঝাই করে মানুষ খুলনার দিকে রওনা দিয়েছে। ট্রেনের ছাদে মানুষ একেবারে থৈ থৈ করছে। অর্থাৎ ওরা (আওয়ামী লীগ) যে বেড়াজাল তৈরি করেছে সেই বেড়াজাল ছিন্ন করে মানুষ উপচে পড়ছে খুলনাতে এবং সারাদেশেও তাই হবে।
মানব সেবা সংঘের সভাপতি সঞ্জয় দে রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী,বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল প্রমুখ।