রাজধানীর খিলগাঁওয়ের খিদমাহ হাসপাতালে স্কুলছাত্র তরিকুল ইসলাম তোহা ওরফে প্রিন্সের (১৭) মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকের অবহেলা আছে কি না, তা অনুসন্ধান করতে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তদন্ত কমিটিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্বাচিত সহযোগী অধ্যাপক বা তধুর্ধ্ব পদমর্যাদার তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে রাখতে বলা হয়েছে।
তদন্ত করে কমিটিকে আগামী বছরের (২০২৩ সালের) ৩০ জানুয়ারি প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
একই সঙ্গে খিদমাহ হাসপাতালের চিকিৎসক মো. জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে যথাযথ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন সংবিধানবহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি, ঢাকার জেলা প্রশাসক, খিদমাহ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার, ড. মো. জাহাঙ্গীর কবিরকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শিশুটির বাবার করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (২৪ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক, ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার ও অ্যাডভোকেট মুনতাসীর মাহমুদ।
স্কুলছাত্র তোহা ওরফে প্রিন্সের বাবা আবুল কাশেমের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসীর মাহমুদ রহমান রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
ওই আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, আদালত এ বিষয়ে একটি রুল দিয়েছেন এবং ঢাকা মেডিকেলের একজন চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত বিশেষজ্ঞদের দিয়ে অবহেলা খতিয়ে দেখতে কমিটি করতে বলেছে।
‘ভুল চিকিৎসায় খাদ্যনালি ছিদ্র হয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু’ শিনোনামে একটি প্রতিবেদন রিটের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ভুল চিকিৎসায় খাদ্যনালি ছিদ্র হয়ে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নবম শ্রেণির ছাত্র তরিকুল ইসলাম তোহা ওরফে প্রিন্স গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মারা গেছে। মুগদায় পরিবারের সঙ্গে থাকতো সে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৮ ডিসেম্বর খিলগাঁওয়ের খিদমাহ হাসপাতালে প্রিন্সের পিত্তথলির অপসারণ করা হয়। রাত ১২টার দিকে অপারেশন করেন ক্যানসার হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর কবির। তবে অপারেশনের পর জটিলতা দেখা দেয়।
এ অবস্থায় পরদিন তাকে জোর করে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। বাসায় ফিরে প্রিন্সের অবস্থার আরও অবনতি হলে ২১ ডিসেম্বর খিদমাহ হাসপাতালে তাকে আবারও নেওয়া হয়। স্বজনদের অভিযোগ, প্রিন্স মুমূর্ষু অবস্থায় চলে গেলেও ডা. জাহাঙ্গীর কবির পাত্তা দেননি।