মঙ্গলবার , ২৫ অক্টোবর ২০২২ | ২৮শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং গভীর রাতে বালুচরে আটকে থাকা নৌকা থেকে নবদম্পতিসহ ৩৭ বরযাত্রী উদ্ধার

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
অক্টোবর ২৫, ২০২২ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাত দিন আগে সদরের আলোকবালী ইউনিয়নের কাজীরকান্দি গ্রামে কনে দেখতে যান ফরহাদ মিয়া (২৬)। এ সময় মৃত আবদুল হাশিমের মেয়ে সাবিনা আক্তারকে (২০) পছন্দ হওয়ায় দুই পক্ষের সম্মতিতে কাবিন হয়। অটোরিকশাচালক ফরহাদ মিয়া নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নয়াকান্দা গ্রামের মৃত সোহরাব মিয়ার ছেলে।

নৌ পুলিশ ও বরপক্ষ বলছে, গতকাল দুপুরে নরসিংদী শহরের থানারঘাট থেকে ৩৫ বরযাত্রী নিয়ে কনেকে উঠিয়ে আনার জন্য একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় আলোকবালীতে যান ফরহাদ মিয়া। সেখানে গিয়ে খাওয়াদাওয়ার পর বিকেল চারটার দিকে কনেকে নিয়ে ওই নৌকায় করে ফিরছিলেন মোট ৩৭ জন। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দিনভরই বৃষ্টি হচ্ছিল। নৌকা মাঝনদীতে আসার পরই প্রবল বাতাস বইতে থাকে। এ সময় বাতাসের তোড়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌকাটি দিগ্‌বিদিক ছুটতে থাকে। একপর্যায়ে নৌকাটি শ্রীনগর ইউনিয়নের পঞ্চবটী গ্রামের দক্ষিণ অংশে কচুরিপানায় আটকে দ্বীপের মতো নির্জন বালুচরে গিয়ে থেমে যায়। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টা সময় তাঁরা সেখানেই আটকে থাকেন।

নৌকাসহ ৩৭ যাত্রীকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে বাকি রাত ফাঁড়িতে কাটিয়ে সকালে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন বরযাত্রীরা।

অনেক চেষ্টার পরও সেখান থেকে বেরোতে না পেরে বরের মামা বাচ্চু মিয়া জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল দিয়ে সাহায্য চান। ৯৯৯ থেকে করিমপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এরপরই নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা প্রবল ঝড়বাতাসের মধ্যেই উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। রাত একটার দিকে নির্জন বালুচরে আটকে থাকা ওই নৌকার হদিস পান তাঁরা। পরে ওই নৌকাসহ ৩৭ যাত্রীকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন তাঁরা। পরে বাকি রাত ফাঁড়িতে কাটিয়ে সকালে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন বরযাত্রীরা।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে

ফরহাদ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধু জবান রাখতেই দুর্যোগপূর্ণ এ পরিস্থিতিতে কনেকে উঠিয়ে আনতে গিয়েছিলাম। এমন পরিস্থিতিতে কনেপক্ষ আমাদের থেকে যেতে বলেছিল। কিন্তু আমরা সবাই ভেবেছিলাম, চলে আসতে পারব। মাঝনদীতে আসার পরই প্রবল ঝড়বাতাস শুরু হলে আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমাদের নৌকাও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। জনমানবহীন ওই চরের মধ্যে এই ৯ ঘণ্টা সময় আমরা কীভাবে পার করেছি, আমরাই জানি। ভাগ্য ভালো, খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকলেও আমাদের সঙ্গে থাকা সবাই সুস্থ আছেন। নৌ পুলিশের সহায়তায় আমরা বেঁচে ফিরতে পেরেছি, এটাই বড় বিষয়।’

করিমপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক ফরিদুল আলম জানান, উদ্ধারের পর বাকি রাতটুকু ফাঁড়িতে অবস্থানের পর সকালে সবাই নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। সবাই সুস্থ আছেন। এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে নৌপথে কনেকে উঠিয়ে আনার এ আয়োজন তাঁরা না করলেই ভালো হতো।

সর্বশেষ - আইন-আদালত