ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৩৫তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি বিদায়ী কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন বলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডমিন) মীর রেজাউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনারসহ ডিএমপির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার গোলাম ফারুককে ডিএমপি কমিশনার হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
খন্দকার গোলাম ফারুক ১৯৬৪ সালের ১ অক্টোবর টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর থানার ঘাটানদি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা প্রয়াত খন্দকার হায়দার আলী ও মা মোসাম্মৎ ফাতেমা বেগম।
তিনি ১৯৯১ সালে ২০ জানুয়ারি ১২তম বিসিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মজীবন শুরু করেন। সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে প্রথমে বগুড়ার ৪-এপিবিএন পরে সিএমপি চট্টগ্রাম এবং খাগড়াছড়ি জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এ এস পি হিসেবে শেষ কর্মস্থল ছিল ডিএমপি ঢাকা।
এরপর তিনি খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় অতিরিক্ত এস পি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর তার প্রথম পোস্টিং হয় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এ আই জি কনফিডেন্সিয়াল শাখায়। তার নিষ্ঠা, বুদ্ধিমত্তা এবং কঠোর পরিশ্রমের কারণে খন্দকার গোলাম ফারুক ঠাকুরগাঁও, কিশোরগঞ্জ, ঝালকাঠি, জামালপুর এবং ময়মনসিংহ জেলায় পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে তিনি ডিএমপি ও ঢাকা রেঞ্জ পুলিশে কাজ করেছেন। এরপর ডিএমপিতে অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) হিসেবে কাজ করেন। তিনি রংপুর রেঞ্জ পুলিশ ও চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সারদা, রাজশাহীর অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন। সর্বশেষ পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০০৬ সালে এবং ২০১৮ সালে দুবার বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম-সেবা) অর্জন করেন। ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম-সেবা) লাভ করেন। তিনি ২০১৯ সালে আইজিপি গুড সার্ভিস ব্যাজও প্রাপ্ত হন।
তিনি ২০১৪ সালে ইন্টারপোল এবং ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন ইন্টারন্যাশনাল ল এনফোর্সমেন্ট ক্রিটিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিম্পোজিয়াম এবং নেপালে অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ প্রশিক্ষণসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত অ্যাঙ্গোলায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ঢাকা শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি (কৃষি) বিষয়ে অনার্স এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি তিন কন্যা সন্তানের বাবা।