ইউক্রেনের কাছ থেকে লিখিত আশ্বাস পাওয়ার পর দেশটির শস্য রপ্তানিতে সহায়তা করার চুক্তিতে ফিরছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
কৃষ্ণ সাগরের এক বন্দরে রুশ রণতরি বহরে ড্রোন হামলার অভিযোগ তুলে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি চুক্তিতে অংশগ্রহণ স্থগিত করেছিল দেশটি।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্ববাজারে দেশটির খাদ্যশস্য রপ্তানি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। এ কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট দেখা দেয় ও দাম বেড়ে যায়।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে ওই চুক্তি হয়েছিল। এর আওতায় রপ্তানি শুরু হওয়ায় খাদ্যের দাম আবার কমে গিয়েছিল।
বুধবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কৃষ্ণ সাগর শস্য করিডরকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে ব্যবহার করা হবে না—কিয়েভের এমন লিখিত নিশ্চয়তার পর তারা ফের শস্য রপ্তানি কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। উল্লেখ্য, ওই চুক্তির আওতায় ইউক্রেনীয় শস্যবাহী জাহাজকে নিরাপদে রুশ নিয়ন্ত্রিত নৌপথে চলতে দেওয়া হয়।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যে নিশ্চয়তাটি দেওয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত বলেই মনে করছে রুশ ফেডারেশন। এ কারণে চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যক্রম আবার শুরু করছে। ’
এর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর বরাত দিয়ে জানান, বুধবার দিনের মধ্যভাগ নাগাদই শস্য রপ্তানি আবার শুরু হতে পারে।
এদিকে রাশিয়ার শস্য রপ্তানি চুক্তিতে ফিরে আসার ঘোষণার পরপরই আন্তর্জাতিক বাজারে গম, সয়াবিন, ভুট্টা ও সরিষার দাম কমে যায়।
রাশিয়া চুক্তিতে তার অংশগ্রহণ স্থগিত করার পরও ইউক্রেনীয় শস্য নিয়ে বেশ কয়েকটি জাহাজ বিদেশে পাড়ি দিয়েছে। কিন্তু রুশ পদক্ষেপের মুখে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো সরে দাঁড়ানোয় দ্রুতই সে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। এখন আর সে ভয় থাকছে না।
রাশিয়ার শস্য রপ্তানি চুক্তিতে ফিরে আসা প্রসঙ্গে রাশিয়া নিয়ে কাজ করা কৃষি বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান সোভেকনের প্রধান আন্দ্রেই সিজভ বলেছেন, এটি বেশ অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন।
তবে নভেম্বরের ১৯ তারিখেই বর্তমান শস্য চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এ সম্পর্কে অবহিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা বলেছেন, আগামী মাসের জি২০ সম্মেলন সামনে রেখে পুতিন শস্যকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের আশায় চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে পারেন।
সূত্র : রয়টার্স