উচ্চফলনশীল জাতের পেঁপে চাষ করে ভাগ্য বদলে গেছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কৃষক আব্দুস সামাদ মিয়ার। তিনি পেঁপে চাষ করে এলাকায় এরইমধ্যে হইচই ফেলেছেন। তাকে অনুসরণ করে এলাকার অনেক কৃষক এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। পেঁপে চাষি আব্দুস সামাদ উপজেলার পলাশবাড়ী পৌরসভার কালুগাড়ী গ্রামের মৃত আশেক আলী মামুনের ছেলে।
পেঁপে বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি প্রতিটি গাছে ঝুলে আছে অসংখ্য কাঁচা পেঁপে। থোঁকার মাঝে মাঝে দু’চারটি পাকা পেঁপেও ঝুলছে। তিন মাস ধরে গাছ থেকে পেঁপে তুলে বিক্রি করছেন তিনি।
জানা যায়, কৃষক আব্দুস সামাদ তার চার বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছেন। প্রায় ১৫ বছর আগে বাছাই করা সোনালি জাতের বীজ সংগ্রহ করে প্রথমে এক বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ শুরু করেন তিনি। এরপর পর্যায়ক্রমে পেঁপে চাষ বাড়াতে থাকেন। এখন তিনি চার বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করছেন।
অন্য ফসলের তুলনায় পেঁপে চাষে লাভ বেশি। খরচও খুব কম। চার বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করতে তার ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বাগান থেকে কাঁচা অবস্থায় প্রতিমণ কাঁচা পেপে ৪শ টাকা আর পাকা পেঁপে ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি করছেন।
বাগান ছাড়াও গাইবান্ধা শহর, গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীর বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। একটি পেঁপে গাছ থেকে দুই-আড়াই মণ ফল পাওয়া যায়। বাগানের একটি পেঁপে সাড়ে ৫ কেজি পর্যন্ত হয়। একটি পেঁপে গাছে ২ বছর ধরে ফল পাওয়া যায়।
কৃষক আব্দুস সামাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর ধরে পেঁপে চাষ করছি। ১ বিঘা দিয়ে শুরু করে এখন ৪ বিঘা জমিতে চাষ করছি। অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম, লাভ বেশি। তাই পেঁপে চাষ করি। স্থানীয় যারা পেঁপে চাষ করতে আগ্রহী; তাদেরও উদ্বুদ্ধ করছি।’
বাগানে পেঁপে কিনতে আসা আউয়াল হোসেন ও কাঁচামাল ব্যবসায়ী কাজিউল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত সামাদ ভাইয়ের বাগান থেকে পেঁপে কিনে বিক্রি করি। প্রতিদিন ১৫-২০ মণ কাঁচা-পাকা পেঁপে নিয়ে যাই। এখানকার পেঁপের মান ভালো। প্রতিমণ পেঁপে ১১-১২শ টাকায় কিনছি। এই পেঁপে ঢাকায়ও পাঠিয়ে দিই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আনিছুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘পেঁপে শরীরকে সুস্থ রাখে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। পাশাপাশি জ্বর নিরাময় ও পেটের নানাবিধ সমস্যাও দূর করে। এ ছাড়া গ্যাস্ট্রিক এবং বদহজমের জন্য খুবই উপকারি। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর এনজাইম আছে, যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।’
পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফাতেমা কাওসার মিশু বলেন, ‘কৃষকদের পেঁপে চাষে উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রণোদনাসহ সার, বীজ দিয়ে সহযোগিতা অব্যাহত আছে। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’