স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ১৪৮ জনের সাধারণ তথ্য পর্যালোচনা করেছে। মৃতদের মধ্যে ৩০ জনের বয়স ২০ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। ২৩ জনের বয়স ১০ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ মৃতদের প্রায় ৩৬ শতাংশের বয়স ১০ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে।
তুলনামূলকভাবে বেশি বয়সীরা হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী রোগে বেশি ভোগেন। এই বয়সীরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তাঁদের জটিলতা বেশি দেখা দেয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বয়স বিভাজনের তথ্য বলছে, ১৪৮ জনের মধ্যে ৫০ থেকে ৫৯ বছর বয়সী ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। অর্থাৎ মৃতদের ৩০ শতাংশের বয়স ৫০ বছর বা তার বেশি।
মৃত্যুর তথ্যে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিনের মধ্যে বেশি মৃত্যু হচ্ছে। ৯৫ জনের বা ৬৪ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে এই সময়ের মধ্যে। ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে। বাকি ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ভর্তির ৬ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে। নারীদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি। ১৪৮ জনের মধ্যে নারী ৮২ জন এবং বাকি ৬৬ জন পুরুষ।
মৃত্যুর কারণ জানতে কমিটি পুনর্গঠন
ডেঙ্গু রোগের ধরনে কিছু পরিবর্তন আসছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. টিটু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান প্রবণতা হচ্ছে, আক্রান্ত রোগীদের পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ বছর কম বয়সীদের মধ্যে মৃত্যু বেশি কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক মো. টিটু মিয়া বলেন, এর জন্য গবেষণা বা গভীর অনুসন্ধান দরকার। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর পর্যালোচনার একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে হয়তো উত্তরটা জানা যাবে।
২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু পর্যালোচনায় কমিটি করেছিল। কিন্তু সেই কমিটির কোনো রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।
এ বছর সেপ্টেম্বরে সেই কমিটির পুনর্গঠন করা হয়েছে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীনকে সভাপতি করে। গতকাল তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে বলেন, পর্যালোচনা কমিটির কোনো সভায় এ পর্যন্ত তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি।
কমিটির সদস্যসচিব ও সিডিসির উপকর্মসূচি ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, কমিটি এ পর্যন্ত একটি মাত্র সভা করেছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আরও একটি সভা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিডিসি সূত্র জানিয়েছে, ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন এমন হাসপাতালগুলোতে ওই সব রোগীর সব তথ্য (ফাইল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠাতে বলা হয়েছে।