দিনাজপুরে বাজারে উঠতে শুরু করেছে আগাম জাতের ধান। এবার বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় আমনের ভালো ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এছাড়া বাজারে ধানের দাম নিয়েও খুশি তারা। এই দাম অব্যাহত থাকলে কৃষকদের বাড়তি যে ব্যয় হয়েছে তা পুষিয়ে যাবে।
মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের সম্পূরক সেচ দিয়ে আগাম জাতের ধান চাষ করতে হয়। এছাড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে সার ও কীটনাশক বেশি দামে কিনতে হয়েছে। এতে আগাম জাতের ধান চাষ করতে গিয়ে কৃষকদের একরে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে।
জেলার কয়েকটি ধানের বাজার খুরে দেখা গেছে, বিনা-৭, ১৬, ১৭, ৭৫ ও ৭৮ এবং জিরা-৯০, ৯২, ধানিগড় ও কটোরাপারি ধান বাজারে আসতে শুরু করেছে।
কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিনা-১৬, ১৭, ৭৫, ৭৮ আগাম জাতের ধান ৭৭ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়। বিনা-৭ বিক্রি হচ্ছে ৭৭ কেজির বস্তা ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকায়।
এছাড়া জিরা-৯০, ৯২ এবং ধানিগড় ৭৭ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকায়। কটোরাপারি বিক্রি হচ্ছে ৭৭ কেজির বস্তা দুই হাজার টাকায়।
সদর উপজেলার গোপালগঞ্জ হাটে ধান বিক্রি করতে আসা নুর ইসলাম বলেন, এবার ধানের ভালো ফলন হয়েছে। আমরা আগাম জাতের ধান মাড়াই করে বাজারে বিক্রি করছি। দামও ভালো। এ দাম থাকলে কৃষক লাভবান হবে। তবে আগাম আলু চাষের জন্য সার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। সার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বেশি নিচ্ছে।
কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের কৃষক ললিত চন্দ্র রায় জানান, তিনি এবার তিন একর জমিতে আগাম জাতের ধান আবাদ করে বেশ ভালো ফলন পেয়েছেন। বর্তমানে সেই জমিতে তিনি আগাম জাতের আলু চাষ করে পরবর্তীতে একই জমিতে ভুট্টা চাষ করবেন।
ধান ব্যবসায়ী মো. আজিজুল হক ও মিজানুর রহমান জানান, সীমিতভাবে আগাম জাতের ধান বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বাজার বেশ ভালো। বাজারে এই দাম পেলে কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে না। তবে সরকার যে দাম ঘোষণা করেছে তাতে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। কারণ সরকারে দেওয়া ধান-চালের দামের চেয়ে বাজারে দাম অনেক বেশি।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, এবার ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। যার মধ্যে ৪৮ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের ধান রয়েছে। এই জমিগুলোতে আলু চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ হবে ১০ হাজার হক্টের জমিতে।