রবিবার , ১১ ডিসেম্বর ২০২২ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

বিএনপির গণসমাবেশ গোলাপবাগ মাঠের বেহাল দশা, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করছে ডিএসসিসি

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
ডিসেম্বর ১১, ২০২২ ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

#১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মাঠটি সংস্কার করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন
#উদ্বোধনের আগ মুহূর্তে মাঠে গণসমাবেশ করেছে বিএনপি
#মাঠের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বিএনপিকে

চার একর আয়তনের গোলাপবাগ মাঠটি প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকায়ন করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। কথা ছিল আগামী বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) মাঠটি উদ্বোধন করা হবে। কিন্তু তার আগেই এই মাঠে গণসমাবেশ করে বেহাল দশা করেছে বিএনপি।

এই গণসমাবেশের কারণে মাঠের সব ঘাস উঠে গেছে। সবুজ ঘাস রোদে শুকিয়ে মরে গেছে। মাঠের চারপাশের গাছপালা, সীমানাপ্রাচীরের পৃ্থক চারটি অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন মাঠটির কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তার হিসাব তৈরি করছে ডিএসসিসি।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মাঠের ধারণক্ষমতার পাঁচ-ছয়গুণ বেশি লোক গোলাপবাগ মাঠে সমবেত হয়েছিল। যদিও পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তা বিবেচনায় নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ।

jagonews24সমাবেশের আগে গোলাপবাগ মাঠের দৃশ্য-ছবি জাগো নিউজ

এ নিয়ে গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংর্ঘষ হয়। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নিহত হন। পুলিশসহ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও শতাধিক। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের গ্রেফতারের নাটকীয়তার পরে গত বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

কিন্তু রাত ৮টা পর্যন্ত এই মাঠে সমাবেশ করতে ডিএসসিসির অনুমতি নেয়নি বিএনপি। তখন রাত ৯টায় ‘গোলাপবাগে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি ডিএসসিসি’ শিরোনামে জাগো নিউজে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এই প্রতিবেদনের পর সমাবেশ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে সংগঠনটি।

পরে ওই দিন রাত ১০টা ৩৭ মিনিটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স গোলাপবাগ খেলার মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেন। তখন ‘গোলাপবাগ খেলার মাঠের কোনো ধরনের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণ প্রদানের শর্তে’ বিএনপিকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেয় ডিএসসিসি।

ডিএসসিসির এই মাঠটি অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন। এই অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম জয় জাগো নিউজকে বলেন, রোববার (১১ ডিসেম্বর) সকালেই আমরা মাঠটি পরিদর্শন করেছি। মাঠটির কী কী ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কতো তা হিসাব করা হচ্ছে। তারপর শর্ত অনুযায়ী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

রোববার বেলা ১১টায় সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো মাঠে ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে আছে। তা পরিষ্কারে কাজ করছে ডিএসসিসির ২৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। মাঠের দক্ষিণ পাশে সীমানাপ্রাচীরের পৃথক চারটি অংশ (গ্রিল) ভাঙা। মাঠের উত্তর এবং দক্ষিণ পাশে চারটি নীমগাছ, বকুল গাছ ভেঙে রয়েছে। মাঠের ঘাস উঠে শুকিয়ে গেছে। মাঠের গ্যালারি, গ্রন্থাগার, ব্যামায়াগার, অফিস পোস্টারে ছেয়ে গেছে। এ ছাড়া সমাবেশের মঞ্চ তৈরিতে যেসব বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছিল, তা মাঠের দক্ষিণ পাশে পড়ে আছে।

jagonews24গোলাপবাগ মাঠের রোববারের সকালের দৃশ্য-ছবি জাগো নিউজ

পরিচ্ছন্নতাকর্মী শাজাহান আলী বলেন, তারা ভোররাত থেকে মাঠের চারপাশের রাস্তা পরিষ্কার করেছে। সমাবেশের কারণে সায়েদাবাদ থেকে গোলাপবাগ, মানিকনগর এলাকার সব রাস্তায়ই ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে ছিল। এগুলো শেষ করে তারপর মাঠ পরিষ্কারে নেমেছেন তারা। মাঠের সম্পূর্ণ আবর্জনা পরিষ্কার করতে বিকেল ৩টা বাজবে বলে জানান তিনি।

ডিএসসিসির প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানায়, ২০০৬-২০১৭ সাল পর্যন্ত এ মাঠ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের নির্মাণকাজে ব্যবহার হয়। পরে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গোলাপবাগ মাঠ সংস্কারকাজ শুরু করে ডিএসসিসি। প্রায় সাড়ে চার একর আয়তনের মাঠে থাকবে একটি বাণিজ্যিক ভবন, ক্রিকেট ও ফুটবল মাঠ, বাস্কেটবল কোর্ট ও স্কেটিংয়ের জায়গা।

এ ছাড়া মাঠের এক কোণে গ্রন্থাগার, ব্যায়ামাগার, গণশৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে সব কাজ শেষ হয়েছে। যদিও ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে এ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতিতে তা করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে ডিএসসিসি।

গোলাপবাগ মাঠ সংলগ্ন বাসিন্দা আকাশ কুমার সাহা। তিনি বলেন, উদ্বোধনের ঠিক আগ মুর্হূতে সমাবেশ করে মাঠটির বারোটা বাজিয়েছে বিএনপি। অথচ দেড় যুগের বেশি সময় ধরে গোলাপবাগ মাঠ খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে ছিল। পরে স্থানীয়দের দাবির মুখে মাঠটি আধুনিকায়ন করলেও এখন সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া ঠিক হয়নি।

jagonews24মাঠ পরিষ্কার করছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা-ছবি জাগো নিউজ

গোলাপবাগ মাঠে নিয়মিত ফুটবল খেলতেন ধলপুরের বাসিন্দা আসাদ মোল্লা। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা থেকেই গোলাপবাগ মাঠে অবস্থান নেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ওই দিন রাতেও তারা কাঁথা-বালিশ নিয়ে মাঠেই অবস্থান করেন। গতকাল সরাদিনই হাজার হাজার মানুষ মাঠে গেছেন। আজ (রোববার) সকালে মাঠ এলাকায় হাঁটতে গিয়ে দেখলাম, মাঠের বিভিন্ন অংশে সীমানাপ্রাচীর, গাছপালা ভেঙে রয়েছে। মাঠে ঘাস বলতে কিছুই নেই। অথচ মাঠে খেলাধুলার জন্য গোলাপবাগ, ধলপুরের মানুষ আশায় বসে আছে।

এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে সরকার যা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বক্তব্য তারই ধারাবাহিকতা। আমার জানামতে আমরা যেখানে সমাবেশ করেছি সেখানে কোনো স্থাপনা ছিল না, আমরা কোনো ক্ষয়ক্ষতি করিনি।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে

আপনার জন্য নির্বাচিত