বুধবার , ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জানার মধ্যেই আমাদের মুক্তি

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
ডিসেম্বর ১৪, ২০২২ ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

১৪ ডিসেম্বর। বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার যে অপচেষ্টা, তার চূড়ান্ত ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠার কালরাত। বিজয় ঘনিয়ে আসার ঊষালগ্নে পরিকল্পিতভাবে এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের চিহ্নিত করার পর হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা। শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হত্যার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি করা হয় এক ঘৃণিত ইতিহাস। সেই ক্ষত আজও বয়ে বেড়াচ্ছে বাঙালি।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য নিয়ে জাগো নিউজের কাছে মতামত ব্যক্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর একটি ভয়ঙ্কর দিন। এদিন রাতে যে ক্ষতি হয়েছে বাঙালি জাতির, তা কখনই পূরণ হওয়ার নয়। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আমাদের স্বকীয়তা ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে নানা পথ অতিক্রম করছি। মুক্তিযুদ্ধে যাদের হারিয়েছি তাদের ক্ষত কখনই ভুলবার নয়। এই ক্ষত নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

প্রতি বছর আমরা ১৪ ডিসেম্বরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করে জাতির সূর্যসন্তানদের স্মরণ করি। আমরা তাদের হয়তো আর ফিরে পাবো না। কিন্তু তাদের রেখে যাওয়া আদর্শ, চেতনা, চিন্তার বিকাশ আমাদের ধারণ করতে হয়। পূর্বসূরিদের চেতনা অনুসরণ করেই আমাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখতে হয়।

এমন আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেই ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বর উদ্বোধন করেন। তিনি সেদিন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেছিলেন, ১৪ ডিসেম্বর যাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাদের অনেকেই আমার সহপাঠী। অনেকের সাহচর্য পেয়েছি বা পরামর্শক ছিলেন। তাদের অনুপ্রেরণা নিয়েই আমাদের পথচলা। আজ তাদের হারিয়ে বাঙালি জাতি বড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষতি কখনই পূরণ হবে না। তাদের রেখে যাওয়া আদর্শ ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, সংকট সব সময় থাকবে। সংকট এখনো আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করাই হচ্ছে সময়ের লক্ষ্য। বিজয়ের সূচনালগ্নে যদি শিক্ষক, সাংবাদিক, লেখক, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবীদের এভাবে হত্যা না করা হতো তাহলে জাতির সংকট মোকাবিলায় শক্ত ভিত দাঁড়াতো। এটি তো উপলব্ধি করা যায় খুব সহজেই। আমরা শহীদদের স্মরণ করেই আত্মচেতনা জাগ্রত করতে পারি।

অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকেই এদেশের মানুষের বুদ্ধিভিত্তিক চেতনার জায়গাটা ধ্বংস করার মিশন শুরু হয়। ১৪ ডিসেম্বর আমরা পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের দোসরদের চূড়ান্ত রূপ দেখতে পাই। জামায়াতে ইসলামী, আলবদর, আলশামসের খুনিচক্র নীলনকশা করে এদেশকে মেধাশূন্য করে দিতো। তারা জানতো, বাঙালির বিজয় ঘনিয়ে আসছে। তারা জাতিকে চিরতরে পঙ্গু করে দিতে এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

আমরা জানি, প্রায় এক হাজার বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। যাদের মধ্যে শিক্ষক, লেখক, ডাক্তার, সাংবাদিক ছিলেন। তাদের সবাই প্রগতিশীল, মুক্তমনা মানুষ ছিল। তাদের চলে যাওয়াটা কোনোভাবেই আমরা পূরণ করতে পারিনি।

স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পার করেছে বাংলাদেশ। আমাদের অনেক অর্জন। অর্থনীতিতে আমরা অবিশ্বাস্য অগ্রগতি অর্জন করেছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তায় আমরা ঈর্ষণীয় সাফল্য এনেছি। তবে বুদ্ধিভিত্তিক জায়গায় আমরা এখনো পিছিয়ে আছি বলে মনে করি। জহির রায়হান, আনোয়ার পাশার মতো মানুষদের আমরা হারিয়েছি। তাদের জায়গায় কে আর আসতে পারে!

বঙ্গবন্ধু সাম্যের বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী সে পথেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। জাতির এই মেধাবীরা বেঁচে থাকলে সে পথ অতিক্রম করা আমাদের জন্য আরও সহজ হতো। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জানতে পারলেই আমাদের মুক্তি। শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারগুলো জাতির কাছে আলাদা গুরুত্ব বহন করে। তাদের পরিবার কত কষ্ট, ত্যাগ স্বীকার করেছে সেটা আমাদের স্মরণে রাখতে হবে।

‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও আমরা তিনজন শিক্ষক বুদ্ধিজীবীকে হারিয়েছি। এর আগে ১৯৬৯ সালে ১৮ ফেব্রুয়ারি আমরা শামসুজ্জোহা স্যারকে হারিয়েছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি এবং ১৪ ডিসেম্বর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালন করি। এবারও আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করার বিশেষ আয়োজন করেছি।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে