বুধবার , ২১ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
  1. Best Reviewed Dating Sites
  2. dating and marrige
  3. Dating Game Rules
  4. অর্থনীতি
  5. আইন-আদালত
  6. আন্তর্জাতিক
  7. উপ-সম্পাদকীয়
  8. কৃষি ও প্রকৃতি
  9. ক্যাম্পাস
  10. খেলাধুলা
  11. চাকরি
  12. জাতীয়
  13. জীবনযাপন
  14. তথ্যপ্রযুক্তি
  15. দেশগ্রাম

ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজায় বিএনপি নেতা, যা বলছে কর্তৃপক্ষ

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
ডিসেম্বর ২১, ২০২২ ৪:১৩ অপরাহ্ণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নেন আলী আজম নামে এক বিএনপি নেতা। তবে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরা অবস্থায় মায়ের জানাজা পড়িয়েছেন তিনি। এ ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর শুরু হয়েছে সমালোচনা।

এদিকে, ডান্ডাবেড়ি নিয়ে বিএনপি নেতার মায়ের জানাজা পড়ানো কারাবিধি মোতাবেক হয়েছে, এতে আইনের কোনো ব্যতয় ঘটেনি বলে জানিয়েছেন গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মো. বজলুর রশিদ আখন্দসহ সংশ্লিষ্টরা।

জেল সুপার জানান, প্যারোলে মুক্তির আদেশের আবেদনপত্রের পাশে পুলিশ স্কটের দায়িত্বরত এসআই কামাল হোসেন ‘ডান্ডাবেড়ি প্রয়োজন’ উল্লেখ করে আবেদন করেন। তবে পুলিশ আবেদন না করলেও জেল কোড অনুযায়ী তিনি ডান্ডাবেড়ি লাগাতেন। কারণ, জানাজা থেকে আসামি উধাও হয়ে গেলে দায়-দায়িত্ব জেল কর্তৃপক্ষের ওপরই বর্তাত। ওই বিবেচনায় তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন। তাছাড়া প্যারোলে মুক্তি পাওয়া কোনো আসামিকে এ পর্যন্ত তিনি ডান্ডবেড়ি ছাড়া মুক্তি দেননি।

jagonews24

এ বিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, পুলিশ শুধু নিরাপত্তা প্রহরায় আসামিকে কারাগার থেকে বাড়িতে আনে এবং জানাজা শেষে ফেরত নিয়ে গেছে। ডান্ডাবেড়ি বা হাতকড়া লাগানো, না লাগানো জেল কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। এজন্য পুলিশের কোনো দায় নেই।

ডান্ডাবেড়ি পরে মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়া আলী আজম কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। তার স্বজনরা জানান, আলী আজমের মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে গত রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে মারা যান করেন। শেষবারের মতো মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম। কিন্তু ওইদিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি মেলে বিএনপির এই নেতার। মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবুরিয়াচালা এলাকায় মায়ের জানাজায় উপস্থিত হন তিনি।

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টায় নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজাস্থলে উপস্থিত হন আলী আজম। বেলা ১১টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মায়ের দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। জানাজা পড়ানোসহ পুরো সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন আলী আজম।

আলী আজমের ভাই আতাউর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে তার ভাইকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। জানাজা পড়ানোর সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দিতে বলা হয়েছিল কিন্তু পুলিশ খুলে দেয়নি।

জানাজার সময়ও আলী আজমের হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন জানাজায় উপস্থিত মুসুল্লি ও স্থানীয় লোকজন। এ অবস্থায় আলী আজমের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, আমার কাছে আবেদন করেছে, আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নির্দেশনা সম্বলিত প্যারোলে মুক্তির আদেশ দিয়েছি। এখন এখানে জেলকোড বা অন্য বিষয়ে পুলিশের নিজস্ব সিকিউরিটি নিয়ে যারা কাজ করেন আপনার বরং তাদের কর্তৃপক্ষের কাছে জিজ্ঞাসা করাই ভালো।

তিনি বলেন, যেহেতু সম্প্রতি একটি দুর্ঘটনা (জঙ্গি পালিয়ে যাওয়া) ঘটেছে। জেলকোডে কিন্তু ডান্ডাবেরি পরানোর কথা বলা আছে। তবে এটা জানাজার সময় খুলবে কী না, এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বা নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের সঙ্গে কথা বলেন। আমরা তো সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা বলে দিয়েছি, তবে এটা নিয়ে একটা মানবিক বিষয় এসেছে, এছাড়া আইনের কোনো বড় ব্যাতয় ঘটেনি।

গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার বজলুর রশিদ বলেন, আসামি জেলের বাইরে গেছে, তাই নিরাপত্তার জন্য ডান্ডাবেরি দিয়েছি। আমার কাছে ওয়ারেন্টে দাগী-নির্দাগী কোনোকিছু বলার থাকে না। আমি শুধু তাদের সেকশনগুলো (ধারা) দেখি। সেকশনে আছে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ৩, ৪, ৫ ধারা। বিস্ফোরক আইনের মামলা আমি কী ছোট করে দেখবো? আমি কোন মামলা ছোট করে দেখবো? ৩৮০ ধারার মামলা, গরুর চুরি মামলা, আমি সেটাও আমি ছোট করে দেখতে পারি না। দেশের জঙ্গিরা কারাগারে থাকাবস্থায় আমাদের সঙ্গে মধুর ব্যবহার করে আবার যখন ঘটনা ঘটায় তখন আমাদের দায়িত্ব নিতে হয়, জবাবদিহিতা আমাদেরই দিতে হয়। এখানে আইনের কোনো ব্যাহত ঘটেনি। জেল কোডে ডান্ডাবেরি পরানোর কথা বলা আছে।

jagonews24

গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি দেশে কোনো আইনের শাসন নেই। মানবাধিকার নেই, আইনের সঠিক প্রয়োগ নেই, সেখানে এসব ঘটনা ঘটতেই থাকবে। সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে এবং নিয়মিতভাবে মানবাধিকার নির্মমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। গাজীপুরের এ ঘটনাটি তার বাস্তব উদাহরণ। একজন রাজনীতিবিদ ও রাজনীতিকের সঙ্গে এমন আচরণে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একটা স্বৈরাচারী সরকার দমন, পীড়ন ও ভয়ভীতি দেখিয়েই কিন্তু ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে, তারই উদাহরণ এটা।

গত ২৯ নভেম্বর গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ককটেল হামলা বিস্ফোরণের অভিযোগে একটি মামলা হয়। মামলায় আলী আজমসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করেন বাদী আবদুল মান্নান শেখ। ওই মামলায় গত ২ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন আলী আজম। তারপর থেকেই তিনি কারাগারে বন্দি আছেন।

সর্বশেষ - সারাদেশ