রবিবার , ১ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলের তেইশের রাজনৈতিক অস্ত্র হচ্ছে ‘দুর্নীতি’

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
জানুয়ারি ১, ২০২৩ ৩:৫১ অপরাহ্ণ

কিন্তু দুর্ভাগ্য, মমতার ১০ বছরের টানা শাসনের পর তৃতীয় দফায় শাসনক্ষমতায় আসার পর শুরু হয় মমতার দলের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। আর তা ফাঁস করে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট বা ইডি। ফলে ৫০ বছরের শাসনের স্বপ্ন ভেঙে যেতে শুরু করে  মাত্র ১১ বছরে পা দিয়েই। জড়িয়ে পড়ে দুর্নীতিতে। স্কুলশিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ায় এবং কোটি রুপি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ফাঁস হয়ে পড়লে ভারতের ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন ১ জুলাই মমতার দলের কেন্দ্রীয় মহাসচিব, রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, সর্বশেষ শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

শুধু তা-ই নয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অর্পিতা মুখার্জির বাড়ি থেকে প্রথম দিনেই উদ্ধার করা হয় ২৬ কোটি ৫০ লাখ রুপি সমমূল্যের বিদেশি অর্থ এবং ৭৫ লাখ রুপির সোনার গয়না। আবার আগস্টে তৃণমূলের দাপুটে নেতা ও বীরভূমের তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ১৬ কোটি ৯৭ লাখ রুপির এফডিআর। গ্রেপ্তার হন অনুব্রত মণ্ডল। শুধু এটাই শেষ নয়, শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে আরও গ্রেপ্তার হন স্কুল সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, মধ্য শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যসহ শিক্ষা দপ্তরের ৭ প্রভাবশালী কর্মকর্তা। তাঁরা সবাই এখন সিবিআই ও ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কলকাতার কারাগারে, জামিন পাননি।

গত বছরের এ দুর্নীতি নিয়ে পুরো রাজ্য আন্দোলনমুখর ছিল। জেরবার হচ্ছিল তৃণমূল। দুর্নীতির কালিমা ঢেকে দিয়েছিল তৃণমূলের উজ্জ্বল মুখ।

এরই মধ্যে আরেকটি দুর্নীতির ছবি ফাঁস হয়ে পড়ে সম্প্রতি। প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনায় ব্যাপক দুর্নীতর আশ্রয় নিয়েছে তৃণমূল। ফাঁস হয়ে পড়ে আবাস যোজনায় দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগের কথাও। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ঘোষিত গরিবের আবাস যোজনায় ৩৪ লাখ ৬৮ হাজার ৬৮৩ জনকে বিনা মূল্যে বসতবাড়ি দেওয়ার ঘোষণার পর গ্রামীণ এলাকার গরিব মানুষেরা বিনা মূল্যে বাড়ি পাওয়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের দপ্তরে ধরনা দেন। কিন্তু শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে যে তালিকা প্রস্তুত করে, তাতে প্রকাশ পায় ওই তালিকার সিংহভাগে রয়েছে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের নাম। নাম অনুপস্থিত গরিব বিজেপির সমর্থকদের। তা-ই নয়, যাঁদের পাকাবাড়ি আছে, চার চাকার গাড়ি আছে, আছে দুই চাকার মোটরবাইক, ট্রাক্টর, টিভি, ফ্রিজ, তাঁদের নামও উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, অবস্থাপন্ন তৃণমূলের বহু নেতা-কর্মী নিজেদের পাকা বাড়ি ছেড়ে কাঁচা বাড়িতে উঠে নাম তুলেছেন। নাম তুলেছেন যৌথ পারবারের সদস্যদের আলাদা নামে। গরিবের আধার কার্ড এনে নিজেরাও ওই নামে বাড়ি বরাদ্দ করিয়েছেন। আর এসব তথ্য ফাঁস হয়ে পড়ায় আবাস যোজনার দুর্নীতি নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন আন্দোলন। এতে এ নববর্ষে এবার শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির আন্দোলনের পাশাপাশি নতুন করে যোগ হয়েছে আবাস যোজনার দুর্নীতির অভিযোগ।

সিপিএমের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ১৫ হাজার কোটি রুপির দুর্নীতি হয়েছে আবাস যোজনায়। গাড়ি-বাড়ি আছে, এমন ব্যক্তিরাও আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়ার তালিকায় নাম তুলতে পেরেছেন।

তাই তেইশে এসে তৃণমূল আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আবাস যোজনার ভুক্তভোগীরা বলেছেন, তৃণমূলের নেতারা এ আবাস যোজনায় নাম তোলার জন্য গরিব মানুষের কাছ থেকেই ২০ থেকে ৩০ হাজার রুপি ঘুষ নিয়েছেন। তাই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মতো আবাস যোজনার দুর্নীতিও প্রভাব ফেলবে এবার এ তেইশে। এ জন্য বিরোধীরা ঘোষণা দিয়েছে, তেইশের আন্দোলনের অস্ত্র হবে আবাস যোজনার দুর্নীতি।

আগামী বছর ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হবে ভারতের লোকসভা নির্বাচন আর এ বছর মার্চে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে এ রাজ্যের বিরোধীরা দুর্নীতিকে অস্ত্র করে রাজনৈতিক ঝড় তুলতে চাইছে রাজ্যজুড়ে।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে