শনিবার , ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

ডিমের দামে খামারে স্বস্তি বাজারে অস্বস্তি

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩ ৪:০৯ পূর্বাহ্ণ

ঈশ্বরদীতে প্রতিদিনই ডিমের দাম বেড়েই চলেছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ঈশ্বরদীর খুচরা বাজারে হালি প্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ১৪ টাকা। খামারে ৪০ টাকা, আড়তে ৪১ থেকে ৪২ টাকা ও খুচরা বাজারে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায় ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে। মাত্র ১৫ দিন আগেও প্রতি হালি ডিম খুচরা বাজারে ৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ডিমের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা স্বস্তিবোধ করলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

খামারিরা জানান, বৃহস্পতি ও শুক্রবার গত দুই দিনে খামারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে ৩৯ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৪০ টাকা ৪০ পয়সায়। প্রতি পিস ডিম ৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১০ টাকা ১০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। ১৫ দিন আগে প্রতি পিস ডিম ৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

jagonews24

ডিমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিরা স্বস্তিবোধ করছেন। তারা জানান, গত ৬ মাস প্রতি পিস ডিম ৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে। অথচ প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১০ টাকা ৫০ পয়সার চেয়েও বেশি। এতদিন প্রতিপিস ডিমে ২ থেকে ২ টাকা ৫০ পয়সা লোকসান হয়েছে। বর্তমান বাজার দরে খামারিরা লাভবান না হলেও অন্তত লোকসান গুনতে হচ্ছে না।

ডিমের পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। খামারে ব্রয়লার ১৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ১৭৫ টাকা।

উপজেলার খয়েরবাড়ি গ্রামের খামারি মহসীন কাজী জাগো নিউজকে জানান, ডিমের বর্তমান বাজারদর ৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। গত ৬ মাস ধরে প্রতি পিস ডিম ৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮ টাকায় স্থির ছিল। অথচ প্রতি পিস ডিম উৎপাদনে খরচ ১০ টাকা ৫০ পয়সা।

তিনি বলেন, মুরগির খাদ্য ও ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে খামারিরা দীর্ঘদিন ধরে লোকসান দিয়ে আসছেন। মাত্র কয়েকদিন হয়েছে ডিমের বাজারদর কিছুটা বেড়েছে। এতেও খামারিদের লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই। অন্তত লোকসান থেকে বাঁচা যাবে।

jagonews24

মারমী গ্রামের খামারি মাহাবুল ইসলাম বলেন, প্রতি পিস ডিম ১০ টাকা করে বিক্রি করেও খামারিরা লাভবান হতে পারবেন না। খাদ্যের দাম যেভাবে বেড়েই চলেছে এতে বহু খামারি খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা না হলে বাকি খামারিরাও নিরুপায় হয়ে খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন।

আথাইল শিমুল গ্রামের পোল্ট্রি খামারি মো. সুজন বলেন, ১৫ দিন ধরে মুরগির দাম বেড়েছে। মুরগির দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুরগির বাচ্চার দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিপিস মুরগির বাচ্চা কিনতে হচ্ছে ৪৬ টাকায়। অথচ ১৫ দিন আগেও এ বাচ্চার দাম ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। ঘুরে ফিরে খামারিদের লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই।

উপজেলার দাশুড়িয়া বাজারের ডিমের আড়তদার কৌশিক এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী এনামুল হক জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি হালি ডিম খামার থেকে আড়তদাররা কিনছেন ৪০ টাকায়। আবার কখনো ৪০ টাকা ৪০ পয়সায়। অর্থাৎ প্রতি পিস ডিম আড়তদার কিনছেন ১০ টাকা এবং ১০ টাকা ১০ পয়সায়। পরে তারা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন প্রতি হালি ৪১ টাকা থেকে ৪১ টাকা ৫০ পয়সায়।

ঈশ্বরদী বাজারের খুচরা ডিম বিক্রেতা ঝন্টু স্টোরের স্বত্তাধিকারী ঝন্টু বলেন, প্রতি হালি ডিম ৪৫ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। গ্রামের হাটবাজার ও মুদিদোকানে ৪৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ঈশ্বরদী বাজারে ডিম কিনতে আসা আমিনুল ইসলাম সুজন জানান, ডিমের দাম বিদ্যুৎ গতিতে বাড়ছে। ৩২ টাকা হালির ডিম কিনতে হচ্ছে ৪৫ টাকায়। প্রতিদিনই ডিমের দাম বাড়তে থাকলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। ডিমের দাম বাড়ার বিষয়টি সরকারের খতিয়ে দেখা দরকার।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) ঈশ্বরদী শাখার সভাপতি জাহাবুল ইসলাম বলেন, বারবার খাদ্য, ওষুধ ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে ক্ষুদ্র খামারিরা প্রায় তিন বছর ধরে লোকসান দিয়ে আসছেন। অসংখ্য খামার বন্ধ হয়ে গেছে। ১৫ দিন হয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। এতে খামারিরা লোকসানের হাত থেকে আপাতত রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু ডিমের দাম বৃদ্ধিতেও খামারিদের লাভ করার সুযোগ নেই। মুরগির খাদ্য, ওষুধ ও বিদ্যুতের মূল্য কমালেই কেবলমাত্র খামারিরা লাভবান হতে পারবেন।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে