শহীদ মিনার কেন তৈরি করেছে, ফুল দিতে হয় কেন, এসব প্রশ্নের সঠিক জবাবে ষষ্ঠ শ্রেণির রুহান ইসলাম বলে, ‘আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি। কিন্তু পাকিস্তানিরা আমাদের উর্দু ভাষায় কথা বলতে বলেছিল। তাদের কথা আমরা শুনিনি। ১৯৫২ সালে আমরা প্রতিবাদ মিছিল করেছিলাম। পাকিস্তানিরা আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল। অনেকে সেদিন শহীদ হয়েছিলেন, রক্ত দিয়েছিলেন। সেই শহীদদের জন্যই আমরা আজকে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি। তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতেই আমরা আজ শহীদ মিনারে ফুল দিচ্ছি।’
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহনা বলে, ‘আগের বছরও আমরা শহীদ মিনার বানাইছিলাম। ফুল দিছিলাম। শুনেছি, আমাদের এই উঠানে অনেক আগে থেকেই বড় ভাই-বোনেরা শহীদ মিনার বানিয়ে ফুল দিতেন। তাই আমরাও শহীদ মিনার বানিয়ে ফুল দিচ্ছি।’
মাঝাপাড়া গ্রামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মুক্তা মাহাবুবা বলেন, প্রায় ১৫ বছর ধরে এই উঠানে শহীদ মিনার বানিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কাজটি করে খেলাঘরের শিশু-কিশোরেরা। এখন আশপাশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। কিন্তু গ্রামের সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে শিশু-কিশোরেরা। একুশের চেতনাকে ধারণ করে তাঁরা বড় হয়েছেন। পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
মুক্তা মাহাবুবা বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় যখন দেখলাম, ছোট শিশুরা শহীদ মিনার তৈরি করছে, নিজেদের মধ্যে ভাষা আন্দোলন নিয়ে কথা বলছে, তখন বুকটা গর্বে ভরে ওঠে।’