ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় রাজশাহী কলেজ হোস্টেলে ঢুকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলেজের মুসলিম হলে এ ঘটনা ঘটে।
রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বুধবার ছাত্রলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রাম ছিল। শিক্ষার্থীরা সেসব প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ না করায় রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলে ঢুকে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলাকারীরা সবাই রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাশিক দত্তের অনুসারী বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে।
অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক বলেন, হামলার ঘটনা শুনে আমরা কলেজ হোস্টেলে এসে তাদের পাইনি। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের জোর করে কোনো অনুষ্ঠানে নেওয়া যাবে না। আমরা তাদের চিহ্নিত করতে চেষ্টা করছি। চিহ্নিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মারধরের শিকার একজন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলাম শরীফ। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় হঠাৎ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দরজায় লাথি দিয়ে ঘরে ঢোকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমাদের মারধর শুরু করে। মারধরের কারণ জানতে চাইলে তারা গালি দিয়ে বলে, আমরা ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে কেন অংশগ্রহণ করিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাশিক দত্ত বলেন, কালকের ঘটনা আমি শুনেছি। এ ঘটনা নিয়ে আমাদের স্যাররা আজকে (বৃহস্পতিবার) ডেকেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আজ বসবো।
তিনি বলেন, জোর করে অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে মিথ্যা কথা ছড়ানো হয়েছে। যারা অনুষ্ঠানে যাবে না তাদের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তারপরও যদি কেউ এমন ঘটনা করে থাকে আমরা ও কলেজ প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, মারধরের ঘটনা শুনে আমরা রাতেই সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। তারা সেখানে গিয়ে অধ্যক্ষ ও অন্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা নিজেরাই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে।
ওসি বলেন, এখন পর্যন্ত কোনোপক্ষ থেকেই অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয় হবে।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন সংগঠনের সদস্যরা।