বৃহস্পতিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ২৮শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

মারিউপোলে ধ্বংসস্তুপের মাঝেও বেঁচে আছেন যিনি

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩ ৫:০৯ অপরাহ্ণ

রাশিয়ার হামলায় ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের বহু এলাকা। চারিদিকে গোলাবারুদ বিষ্ফোরণের বিকট শব্দের মধ্যে বাস করছেন ইউক্রেনীয়রা। কেউ দেশ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন অন্য দেশে। কেউ-বা হাজারও দুঃখ বেদনা সহ্য করে রয়ে গেছেন মাতৃভূমিতেই। এমনই একজন নারী মারিউপোলের ৬৫ বছর বয়সী বাসিন্দা তাতিয়ানা বুশলানোভার।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিজ বাড়ির সামনে অবিচলভাবে দাঁড়িয়ে নিজের গল্প বলছিলেন তাতিয়ানা। ইউক্রেনের এই নগরীতে যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলেও ক্ষয়ক্ষতি ও যুদ্ধের ভয়াবহতা মেনে নিতে এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাসিন্দারা।

রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুই হয় মারিউপোলে রুশ সেনাদের আক্রমণের মাধ্যমে। আজভ সাগরের উত্তর উপকূলে অবস্থিত ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী হলো মারিউপোল। কৌশলগত অবস্থানের কারণেই রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছিল অঞ্চলটি। মে মাসের মধ্যেই মারিউপোল পুরোপুরি দখল করে নিয়েছিল রুশবাহিনী। ততদিনে নগরীটির বেশিরভাগ অংশই পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে, প্রাণ গেছে হাজার হাজার মানুষের। যুদ্ধের আগে এই নগরীতে বসবাস করা অর্ধেকের বেশি মানুষই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছেড়েছে তাদের বসতভিটা।

তবে তাতিয়ানা ও তার স্বামী ছাড়তে পারেননি তাদের প্রিয় নগরী। শুধু ভালোবাসার কারণেই নয়, যাওয়ার আর কোন জায়গাও ছিল না তাদের। যদিও তাদের ছেলে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাড়ি জমিয়েছে ক্রিমিয়ায় । তবে তারা এখন বাস করছেন আন্দ্রেই-মারিয়ানা দম্পতির বাসায়, যারা যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে।

তারা বলেন, ‘আমরা নিজ এলাকা ছাড়তে চাইনি, তবে আমরা একটু খেয়ে বাঁচতে চেয়েছিলাম। তবে বাইরে থেকে কিছু নিয়ে আসা বা রান্না করারও কোনও পরিস্থিতি ছিল না।’

এখনও তারা মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন সব কিছুর সঙ্গে। তাদের চোখের সামনে মারা গেছে পরিচিত, অপরিচিত অনেক মানুষ। বিস্ফোরণে ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়ে মারা গেছেন তার এক প্রতিবেশী, গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে আরেক প্রতিবেশীর ছেলে, কারও কারও শরীর হয়েছে বিকলাঙ্গ, কেউ কেউ হারিয়েছে হাত, পা, চোখসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ।

‘সব হারিয়ে মানুষ এখন কেমন যেন হয়ে গেছে। কারও মধ্যে আর উদারতা বা মানবিকতা দেখি না আমি’, বলেন তাতিয়ানা।

তবে এখন কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছে তাদের মধ্যে। রুশ সরকার শহরটিকে পুনর্গঠন করার ঘোষণা দিয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছেন এই দম্পতি। বেতনের পাশাপাশি দুজনের ১০ হাজার রুবল পেনশনের টাকা দিয়ে টেনে টুনে সংসার চালাচ্ছেন তারা।  তবে রুশ সরকারের কাছে এক লাখ রুবল (১৩৫০ ডলার) ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করেছেন। এই অর্থ দিয়ে নিজেদের জন্য একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ইচ্ছে তাদের।

‘আমরা একটু শান্তি আর নিজেদের একটা বাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। এই বয়সে এসে এর চেয়ে বেশি কিছু আর প্রয়োজন নেই’, বলেন তারা।

সূত্র: রয়টার্স

সর্বশেষ - আইন-আদালত