রবিবার , ১২ মার্চ ২০২৩ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

কফিন বদল, কবর খুঁড়েও হলো না দাফন

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
মার্চ ১২, ২০২৩ ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

গ্রামজুড়ে মৃত্যুর খবর প্রচার করা হয়। জানাজায় অংশ নিতে বাড়িতে এসে জড়ো হন স্বজনসহ পুরো গ্রামের লোকজন। মরদেহ বহনের জন্য প্রস্তুত করা হয় খাটিয়া। দাফনের জন্য খোঁড়া হয় কবর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দাফন ও জানাজা হলো না। কারণ, কফিন খুলে জানা গেলো, মরদেহটি অন্যজনের।

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্বপাগলা ইউনিয়নের দামোধরতপীর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির জালাল মিয়া মরদেহ ভুল করে সুনামগঞ্জের দামোধরতপীর গ্রামের আফছর মিয়ার ঠিকানায় পাঠানোয় এমন ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পূর্বপাগলা ইউনিয়নের দামোধরতপী গ্রামের মরহুম জমসিদ আলীর বড় ছেলে আফছর মিয়া (৪১) গত ২৮ ফেব্রুয়ারি লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গ্রিসের এথেন্সের সুতরি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার অপর ভাই মো. এমরান মিয়াও সেখানে ছিলেন। মৃত্যুর চারদিন পর মরদেহ দেশে আনার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এমরান দেশে ফেরেন।

শুক্রবার আফছরের মরদেহ দেশে আসার কথা ছিল। আফছর মিয়ার কফিনে যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল। ওই ঠিকানায় শুক্রবার রাত তিনটায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি লাশবাহী গাড়িও এসে পৌঁছায়। আফছর মিয়ার স্বজনদের কান্নায় ওই সময় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। গ্রামের মাইকে জানাজার সময়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। খোঁড়া হয় কবর। কিন্তু ফ্রিজিংভ্যান থেকে মরদেহ নামানোর পর বাঁধে বিপত্তি। দেখা যায়, মরদেহটি আফছর মিয়ার নয়।

পুলিশ ও আফছর মিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, যে মরদেহটি আফছর মিয়ার বাড়িতে এসে পৌঁছে সেটি জালাল মিয়া (৫২) নামে এক ব্যক্তির। যার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার শিলনপুর গ্রামে। তার বাবা শফিক উদ্দিন। তিনিও গ্রিস প্রবাসী ছিলেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আগামী ১৩ মার্চ তার মরদেহ দেশে আসার কথা। ভুলবশত আফছর মিয়ার নাম সম্বলিত স্টিকারটি জালাল মিয়ার কফিনে এবং জালাল মিয়ার স্টিকার আফছর মিয়ার কফিনে লাগিয়ে দেওয়ায় একজনের মরদেহ আরেকজনের ঠিকানায় চলে আসে।

আফছর মিয়ার মরদেহ এখনো গ্রিসের এথেন্সে আছে। আগামী ১৩ মার্চ জালাল মিয়ার মরদেহ যে ফ্লাইটে আসার কথা রয়েছে, ওই ফ্লাইটে আফছরের কফিন আসবে বলে জানিয়েন স্বজনরা।

আফছর মিয়ার ভাগ্নে তোফায়েল আহমদ কামরান বলেন, মামার মরদেহ রিসিভ করতে শুক্রবার ঢাকা এয়ারপোর্টে যাই। সেখানে সব প্রক্রিয়া শেষ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে রাত ৩ টা ২০ মিনিটে এসে পৌঁছাই। এর মধ্যেই মাইকে জানাজার নামাজ কখন হবে জানিয়ে দেওয়া হয়। ভোর থেকে কবর খোঁড়া হয়। সকাল ১০টায় যখন কফিন খোলা হয়, তখন দেখা যায় মরদেহটি মামার নয়। এরপর আমরা পুলিশে খবর দিই। পুলিশ এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে এই মরদেহ মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির। তার নাম জালাল মিয়া।

জালাল মিয়ার ছোট ভাই আলমগীর হোসেন শনিবার বিকেলে মোবাইলফোনে বলেন, আমার ভাইয়ের মরদেহ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে পাঠাচ্ছে পুলিশ। ওখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমি মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি।

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলে আসি। অনেক চেষ্টা করে জালাল উদ্দিনের ঠিকানা ও ফোন নম্বর পাই। তাদের সঙ্গে কথা বলি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

তিনি আরও বলেন, দামোধরতপীর গ্রামের আফছর মিয়ার মরদেহ এখনো আসেনি। সমস্যাটা হয়েছে গ্রিসে। আগামী ১৩ তারিখ আফছরের মরদেহ দেশে আসার কথা রয়েছে।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে