মঙ্গলবার , ২৩ মে ২০২৩ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

‘আশি বছর পরে এসে ঔপনিবেশিক কাঠামোতে রাষ্ট্র চলবে না’

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
মে ২৩, ২০২৩ ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

আলতাফ পারভেজ। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাস বিষয়ক গবেষক। লিখছেন রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক নানা প্রসঙ্গ নিয়ে। পাকিস্তান পরিস্থিতি, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি, ভারতের কর্নাটকের নির্বাচন নিয়ে মুখোমুখি হন জাগো নিউজের। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ থাকছে শেষটি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়েম সাবু।

জাগো নিউজ: পাকিস্তানের চলমান পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য কী বার্তা দিচ্ছে?

 এখন যদি ভারতে নির্বাচন হয় বিজেপি জয়ী হবে। তবে কর্নাটকের নির্বাচন বার্তা দিয়েছে, বিজেপি অপরাজেয় শক্তি নয়। রাহুল গান্ধী কিছুদিন আগে ‘ভারত জোড়’ নামে যে লংমার্চ করেছে তারও ফল মিলেছে কর্নাটকের এই নির্বাচনে। অন্তত জনমনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।

আলতাফ পারভেজ: মিয়ারমারের সংকট আরও গভীর। এখানে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় যেতে দেয়নি সেনাবাহিনী। শ্রীলঙ্কায়ও সেনাবাহিনীর সমর্থনে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। দক্ষিণ এশিয়ার সংকটটা ঠিক অন্য জায়গায়।

জাগো নিউজ: বাংলাদেশ?

আলতাফ পারভেজ: দক্ষিণ এশিয়া থেকে ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পরে এখানকার রাষ্ট্রগুলোতে সংস্কার হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ায় ঔপনিবেশিক কাঠামোই বিরাজ করছে। আশি বছর পরে এসে এই কাঠামোতে রাষ্ট্র আর চলবে না। পাকিস্তানের ঘটনা বলি, মিয়ানমারের ঘটনা বলি আর বাংলাদেশের কথাই বলি, এখানে গণতন্ত্র দরকার। নির্বাচন গণতন্ত্রের ন্যূনতম একটি জায়গা। নির্বাচনই গণতন্ত্রের সবকিছু নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকারগুলো ক্ষমতায় আসবে আর তাদের প্রধানতম কাজ হবে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার। সংস্কার না হলে বারবার এ ধরনের সংকট সৃষ্টি হতেই থাকবে।

পাকিস্তানে কিন্তু কিছু নির্বাচন হয়েছে। মিয়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায় নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নিয়েছিল। বাংলাদেশেও দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু নির্বাচিত সরকারগুলো রাষ্ট্র কাঠামো বদলায়নি। এ কারণেই রাজনৈতিক মৌলিক সংকট দূর হচ্ছে না।

জাগো নিউজ: সংকট আরও বাড়বে কি না?

আলতাফ পারভেজ: মিয়ানমারে রীতিমতো গৃহযুদ্ধ চলছে। শ্রীলঙ্কায় স্বাধীনতার ৭০ বছর পরে মাত্র এক ব্যক্তি দেশ শাসন করছে এখন। পাকিস্তানে বারবার নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু কোনো পরিবর্তন নেই। তার মানে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এ কারণে বলছি যে এই দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে প্রায় দেউলিয়া হয়ে পড়ছে। যা আগে ছিল না। ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর এই দেশগুলো তো অন্তত দেউলিয়া ছিল না। তার মানে কাঠামোর পরিবর্তন না হওয়ার কারণে আজকের এ পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি বুঝতে না পারলে কোনো সমাধানই আসবে না।

জাগো নিউজ: হিমাচলের পর কর্নাটকে বিজেপি ধরাশায়ী। বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। ভারতের জাতীয় রাজনীতি, সামনের নির্বাচন নিয়ে কী বিশ্লেষণ জানাবেন?

আলতাফ পারভেজ: কর্নাটকে একটি রাজ্যসভার নির্বাচন হয়েছে। যদিও এটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। বিজেপি এখানে বড় ব্যবধানে হেরেছে। তবে মনে রাখতে হবে এটি জাতীয় নির্বাচন নয়। এখানে কংগ্রেসের অবস্থা তুলনামূলক ভালো ছিল। কিন্তু তার মানে এই নয় যে কংগ্রেস জাতীয় নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে দেবে।

এখন যদি ভারতে নির্বাচন হয় বিজেপি জয়ী হবে। তবে কর্নাটকের নির্বাচন বার্তা দিয়েছে, বিজেপি অপরাজেয় শক্তি নয়। রাহুল গান্ধী কিছুদিন আগে ‘ভারত জোড়’ নামে যে লংমার্চ করেছে তারও ফল মিলেছে কর্নাটকের এই নির্বাচনে। অন্তত জনমনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।

এর প্রমাণ হচ্ছে কংগ্রেস কেবল জিতেছে তা নয়, দলটির ভোট সংখ্যাও ব্যাপক বেড়েছে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কংগ্রেসের রাজনীতি চাঙা হয়েছে, যা জাতীয় নির্বাচনে বাড়তি উদ্দীপনা জোগাবে। তবে জাতীয় নির্বাচনে কংগ্রেস বিজেপিকে হারানোর শক্তি অর্জন করেছে, তা এখনো বলা যাবে না।

জাগো নিউজ: হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ওপর ভর করে বিজেপির যে রাজনীতি তাতে ভাটা পড়বে নাকি ধর্মীয় ইস্যুতে আরও বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা চলবে?

আলতাফ পারভেজ: সংখ্যাগুরুদের একদিকে আর সংখ্যালঘুদের আরেকদিকে ফেলে রাখার যে রাজনীতি বিজেপি প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে তা কর্নাটকের মানুষ প্রত্যাখ্যান করছে। বিজেপির হিন্দুত্ববাদের যে কৌশল তা কর্নাটকে কাজ করেনি। তবে অন্য রাজ্যে কী করবে তা বলার সময় আসেনি। বোঝার ব্যাপার আছে রাজ্যসভার এ নির্বাচন থেকে।

 দক্ষিণ এশিয়া থেকে ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পরে এখানকার রাষ্ট্রগুলোতে সংস্কার হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ায় ঔপনিবেশিক কাঠামোই বিরাজ করছে। আশি বছর পরে এসে এই কাঠামোতে রাষ্ট্র আর চলবে না।

জাগো নিউজ: তার মানে সামনের নির্বাচনে বিজেপিই আসছে?

আলতাফ পারভেজ: আপাতত তাই মনে করতে হবে। তবে নির্বাচনের আরও এক বছর বাকি। অনেক সময়। অনেক ঘটনাই ঘটতে পারে। জাতীয় পরিসরে বিজেপি এখনো ভালো অবস্থানে আছে।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে