বৃহস্পতিবার , ২৫ মে ২০২৩ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

মাউশির ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয় বেড়েছে নজরদারি, সেবায় সন্তোষ শিক্ষক-কর্মচারীদের

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
মে ২৫, ২০২৩ ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ

ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ওঠার পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয়ে নজরদারি শুরু করেছে প্রধান কার্যালয়। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) সরেজমিনে পরিদর্শনে নেমেছে। এই দুই সংস্থার কর্মকর্তাদের যাতায়াতের সুফল পাচ্ছেন সেবাপ্রার্থী শিক্ষক-কর্মচারীরা। কমেছে হয়রানি। প্রকাশ্যে ঘুস লেনদেনের চিত্রও নেই। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা। এই নজরদারী এমপিওর মাসগুলোতেও অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।

মিরপুরে অবস্থিত মাউশির এই দপ্তরে বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন এমপিও সংক্রান্ত কাজে ঢাকা আঞ্চলিক অফিসে আসেন ফরিদপুর সদরের সম্মিলনী মাাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনিসুর রহমান।

এই শিক্ষক বলেন, এমপিওভুক্তির জন্য আমাদের বিদ্যালয়ে নতুন দুজন শিক্ষক আবেদন করেছেন। আবেদনগুলোর কী অবস্থা সেটি দেখতে স্কুল থেকে আমাকে এখানে পাঠানো হয়েছে। এখানে এসে খবর নিয়ে দেখি, ৫ জন আবেদন করলেও দুজনের এমপিও অনুমোদন হয়েছে। বাকিদের আবেদন অসম্পূর্ণ থাকায় সেগুলো আটকে আছে। বিষয়টি আমি প্রধান শিক্ষক স্যারকে জানিয়েছি। স্যার অনলাইনে সেসব কাগজ পাঠিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে অনলাইনে খোঁজ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন উপ-পরিচালক স্যার।

কথা হয় গাজীপুর সদরের হাতিমারা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে। গত ডিসেম্বরে তিনি এমপিওর জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তার এমপিও হচ্ছিল না। জানুয়ারিতে নতুন উপ-পরিচালক যোগদানের পর তিনি আশা করেছিলেন পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু ওই মাসেও আবেদন অসম্পূর্ণ বলে বাতিল করা হয়। পরে ফের আবেদন করেন। কাঙ্ক্ষিত এমপিওর কাজের অগ্রগতি জানতে এসে তিনি খুশিই হয়েছেন।

উপ-পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি জানান, আবেদন বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জানা গেছে, প্রতি বিজোড় মাসে এমপিওভুক্তির সভা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে। গত দুই মাসে (মার্চ ও মে) মোট ৬৪৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নতুন এমপিওভুক্তি করা হয়েছে। তার মধ্যে মার্চ মাসে ২৪৪ জন ও মে মাসে ৪০০ জন রয়েছে। এর বাইরে বিএড স্কেল, উচ্চতর গ্রেড, বদলি, নাম-বয়স সংশোধন, এরিয়ারসহ অন্যান্য কাজ হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এসব কাজ হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

জানতে চাইলে উপ-পরিচালক (ডিডি) এ এস এম আব্দুল খালেক জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকা অঞ্চলের ডিডি হিসেবে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি যোগদান করি। যোগদানের পরে দুটি ধাপে এমপিওর কাজ করা হয়েছে। আবেদনকারীরা যাতে সঠিক সময়ে সেবা পান সেটি নিশ্চিত করতে আমরা শতভাগ চেষ্টা করেছি। সঠিক পরামর্শ ও অভিযোগ জানাতে আমার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর নোটিশ বোর্ডে উল্লেখ করে দিয়েছি। প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয় জানতে শতাধিক ফোন আসছে। সুতরাং এখানে আর্থিক অনিয়মের যে অভিযোগ তোলা হয়, সেটি সত্য নয়।

তিনি বলেন, রোববার (২১ মে) একজন শিক্ষক এসে একটি টেলিটক নম্বর থেকে তাকে ফোন করে কাজের নামে টাকা চেয়েছে বলে অভিযোগ দেন। অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নম্বর যাচাই করে দেখেছি সেটি এখানের কারো নম্বর নয়। সে কারণে এই নম্বরে থানায় জিডি করে সেই কপি আমাদের দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। কেউ যাতে আমাদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করতে না পারে, সেজন্য আমরা সজাগ রয়েছি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক সেবা প্রদানের চেষ্টা করছি। এমপিও’র কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে অঙ্গিকারবদ্ধ।

‘আর্থিক সুবিধা নিয়ে কেউ কাজ করে দেবে, বিষয়টি আমাদের কাছে বিব্রতকর। সেটি বন্ধ করতে আমার ব্যবহৃত নম্বর বোর্ডে দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কেউ এ ধরনের প্রতারণার শিকার হন তাহলে থানায় জিডি করে সেই কপি দিলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবো। স্বচ্ছভাবে সেবা দিতে আমাদের জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করেছি। কোনো কাগজের ঘাটতি থাকলে সেই ফাইল অনুমোদন হয় না।’

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘এ যেন ঘুসের হাটবাজার’ শিরোনামে জাগো নিউজে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। বিষয়টি আমলে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খতিয়ে দেখছে। মাউশি থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির তদন্ত চলমান।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক মো. আমির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, কমিটির সদস্যরা মিলে আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিনভর আলাদাভাবে জিজ্ঞাবাদ করেছি। ঘুস লেনদেনের কোনো প্রমাণ ও এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, কারো জড়িতের প্রমাণ পাওয়া না গেলেও ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ যেন কেউ না করতে পারে সে কারণে সবাইকে সর্তক করতে প্রতিবেদনের সুপারিশ করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ প্রতিবেদন পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে