গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর ভৌরাঘাটা থেকে এক যুবককে সাদা পোশাকে থানায় তুলে নিয়ে হাত-পা ও চোখ বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই যুবক পুলিশের ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জ এবং পুলিশ সুপার গাজীপুর বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ওই যুবক একটি মামলার আসামি হওয়ায় তাকে ধরে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন পুলিশ কর্মকর্তা।
ভিকটিম ওই যুবক হলেন গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়াচালা এলাকার মৃত দরবেশ নূর হোসেন ফকিরের ছেলে মো. সামু সরকার।
সামু সরকার ও তার পরিবার সদস্যরা বলেন, গত ৮ মে দিবাগত রাতে বাহির থেকে বাসায় এসে দেখতে পায় ভৌড়াঘাটা এলাকার ফারুক হোসেন নামে এক লোক তার ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রয়েছে। পরে এ ঘটনায় ওই যুবককে আটকে রেখে জয়দেবপুর থানা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরেরদিন ফারুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ফারুকের বড়ভাই ফিরোজ বাদী হয়ে ৯ মে সমু সরকারের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ১৪ মে দুপুরে সাদা পোশাকে জয়দেবপুর থানার এসআই ইউনুসসহ তার সঙ্গীয় দুই পুলিশ সদস্য সমু সরকারকে থানায় নিয়ে যায়।
সমু সরকার অভিযোগ করেন, তাকে থানায় নিয়ে গারদখানার পাশে একটি রুমে আটকিয়ে চোখ বেঁধে বেধড়ক পেটায় এবং একপর্যায়ে তার দুই হাত ও পা একসাথে বেঁধে টেবিল এবং চেয়ারের মাঝখানে আনুমানিক আধা ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখে।
সমু সরকার যুগান্তরকে বলেন, পুলিশের অমানবিক নির্যাতন সইতে না পেরে জোরে চিৎকার করলে পুলিশ বলে- বল পুলিশ আমার বাপ লাগে। ওই সময় ওসি অপারেশন বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন। এ অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে পুলিশ তাকে একটি গাড়িতে তুলে শ্রীপুরে একটি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয় এবং ওই দিন বিকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করে। পরদিন জামিনে মুক্ত হয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন হাসপাতালে ভর্তি হয় সমু সরকার।
সমু সরকার আরও বলেন, ফারুক অসৎ উদ্দেশ্যে তার ঘরে লুকিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়ে উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা নেয়। এ ঘটনায় তিনি গত ৩১ মে পুলিশের ডিআইজি এবং পুলিশ সুপার বরাবর বিচার চেয়ে আবেদন করেছেন।
সমু সরকারের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম বলেন, তার স্বামী দুপুরে শুয়ে ছিলেন। এমন সময় দুজন সাদা পোশাকে লোক এসে সরাসরি রুমে প্রবেশ করে সমু সরকারের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহতাব উদ্দিন বলেন, আমার দারোগা যদি ভুল করে থাকে আমার কাছে বিচার দিক। আমি তাকে কয়েকবার থানায় আসতে বলছি কিন্তু সে আসেনি।
এ বিষয়ে গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, মারধর করা হয়েছে বিষয়টি সে আমাকে বলেছে। আমি তাকে একটা অভিযোগ দিতে বলেছি।