মঙ্গলবার , ১৩ জুন ২০২৩ | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

‘আর ৪-৫ মাস পরে এমন দেখা দেখবেন, খবর হবে’

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
জুন ১৩, ২০২৩ ৪:৩৮ অপরাহ্ণ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মুহম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি গাড়ি গর্তে পড়ে গেলে যে অবস্থা হয়; বাংলাদেশ এখন গর্তে পড়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন গর্ত থেকে উঠতেও পারছে না, পেছাতেও পারছে না, এগোতেও পারছে না।

তিনি বলেন- যারা ড্রাইভার, যারা চালনা করছেন, যারা সরকারে আছেন তারা ছাড়ছেনও না এবং কাউকে চালাতেও দিচ্ছেন না। গর্তের মধ্যেই শুধু আমরা পড়ে আছি। গর্তের মধ্যে পড়ার কারণ হলো আমরা বেআইনি নীতিতে চলি।

মঙ্গলবার বিকালে শেরপুর শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, আমাদের দেশে বিদেশি টাকা নাই, দেশি টাকাও নাই। বিদেশি টাকা নাই কেন- আমরা যা আয়-ইনকাম করি রপ্তানি করে, আমাদের বিদেশি প্রবাসী ভাইয়েরা কষ্ট করে টাকা পাঠান; আর আমরা কিছু আমদানি করি বিভিন্ন কারণে দরকার হয়। সেটা যখন ট্রেজারিতে থাকে মোটামুটি আমাদের চলে। তারপরও যখন কম বেশি হয় সেটা ম্যানেজ করা কঠিন নয়; কিন্তু এখন ম্যানেজ করা যাচ্ছে না। কারণ হলো বিশাল অঙ্কের ঋণ নেওয়া হয়েছে এবং বিশাল অঙ্কের টাকা বিদেশ থেকে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, যে টাকাগুলোর সুদ এবং লাখ লাখ কোটি টাকার আসল এখন আমাদের দিতে হয়। ফলে আমরা দেউলিয়া হয়ে গেছি। আমাদের যা আয়-ইনকাম হয় তা ঋণের জন্য আমাদের প্রচুর টাকা দিয়ে দিতে হয়। সুদ হিসেবে এবং ইনস্টলমেন্ট হিসেবে এ টাকা দিতে হয়। ফলে ফরেন এক্সেচেঞ্জ নাই।

বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় ৫২ বছর। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ দেশ চালিয়েছে সাড়ে ২৩ বছর। তারা ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে ‘হত্যা’ করেছে। বিদ্যুতের উৎপাদনের নামে ‘সীমাহীন দুর্নীতি’ করেছে। সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বললেও ‘বিদ্যুৎ পাচ্ছে না’। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বেড়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় কোনো মানুষ ভালো নেই।

তিনি বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হোক আমরা সেটাই চাই। আমরা জিততে চাই না। হারতে চাই না। আমরা চাই জনগণের জবাবদিহিতার সরকার আসুক। এই সরকার (আওয়ামী লীগ) বর্তমানে লুটপাট করে একশ্রেণির কাছে তুলে দিয়েছে। যারা বাংলাদেশের সম্পদ আমেরিকা, কানাডা ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে দিয়েছে।

নেতাকর্মীদের বাঁচার সংগ্রামের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আওয়ামী লীগের বাইরে চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য কেউ করতে পারছে না। আওয়ামী লীগ ছাড়া সাধারণ মানুষকে হীন ক্রীতদাস রাখা হবে। সাধারণ মানুষ শুধু ট্যাক্স দিবে, ভোগ করবে তারা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে বিভাজন সৃষ্টি করেছে, আওয়ামী লীগ ও নন-আওয়ামী লীগ। সবাই তো আর দল করে না, রাজনীতি করে না। তারা বলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আর মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও নেই। যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল তারা ইতোমধ্যেই নির্মূল হয়ে গেছে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতা নেয় তখন ব্যাংক ডিফোল্ডার (ঋণখেলাপি) ছিল মাত্র ২১ হাজার কোটি টাকা। আজকে আওয়ামী লীগের সময় ব্যাংক ডিফোল্ডার ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। আপনারা আওয়ামী লীগ হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যবসার নামে মর্টগেজ না দিয়ে ভুয়া কাগজ দিয়ে উঠিয়ে লন্ডনে আমেরিকা, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া বাড়ি করবেন, ব্যবসা করবেন আর আমরা কিছু বলতে পারব না। জনগণের পক্ষে বললে চোখে দেখি না বলবেন। না চোখে দেখবেন। আর ৪-৫ মাস পরে এমন দেখা দেখবেন, কেমন দেখা যায় এটা এবার বুঝবেন। খবর হবে।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান ও শেরপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াছ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. ফকরুল ইমাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফা আল মাহমুদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সিরাজুল হক প্রমুখ।

সম্মেলনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ (সদর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মো. ইলিয়াছ উদ্দিনকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

সম্মেলনে আলোচনা শেষে আগামী দুই বছরের জন্য জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি পদে মো. ইলিয়াছ উদ্দিনকে, মাহমুদুল হক মনিকে সাধারণ সম্পাদক ও এসএম আশরাফকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব।

বেলা ১১টার দিকে শেরপুরে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন ও জেলা জাতীয় পার্টির নেতাদের ছবি সংবলিত পোস্টার নিয়ে সম্মেলনে যোগদান করেন। সম্মেলন উপলক্ষ্যে শেরপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গেট নির্মাণ করা হয়।

 

সর্বশেষ - আইন-আদালত