ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে করতে হবে। এখনই রাজ্যের সাতটি স্পর্শকাতর জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বাকি সব জেলায়ও পর্যায়ক্রমে পরিস্থিতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে বিরোধীদের করা মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার আদালত এই আদেশ দেন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়।
হাইকোর্ট আদেশে বলেন, নির্বাচনের তফসিল যেভাবে ঘোষণা করা হয়েছে, সেভাবেই নির্বাচন হবে। তবে এই রাজ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে রাজ্যের সাতটি স্পর্শকাতর জেলাসহ অন্যান্য জেলায় মোতায়েন করতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বসাতে হব সিসিটিভি ক্যামেরা। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
কলকাতার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা গত ৮ জুন সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ৯ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।
তফসিল ঘোষণার পর বিরোধীরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। রাজ্য পুলিশকে নিয়ে নির্বাচন করার পক্ষে সায় দেয়নি বিরোধীরা। পাশাপাশি তারা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল ও ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল। এই দুই দাবিতে রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা ও বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সংসদ সদস্য অধীর চৌধুরী কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন।
মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার চতুর্থ দিনেও শাসকদল বিভিন্ন এলাকায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বিরোধীদের বাধার সৃষ্টি করে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে আজ সবচেয়ে বেশি সংঘর্ষ হয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ভাঙরে। এখানে ডিডিও অফিসে আইএসএফ বা ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে বাধা দেয় তৃণমূলের সমর্থকেরা। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আইএসএফ ও তৃণমূলের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি।
অন্যদিকে আজ নন্দীগ্রামে শতাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেন স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি-দলীয় প্রার্থীরা।
এবার এই রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রথম পর্যায়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৩ হাজার ২৮৩, পঞ্চায়েত সমিতির ৯ হাজার ৪৯৮ এবং জেলা পরিষদের ৯২৮ আসনে নির্বাচন হচ্ছে। গত নির্বাচনে সংঘর্ষে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল রাজ্যে। এবার এ পর্যন্ত একজন নিহত হয়েছে।