অ্যাশেজ সিরিজ শুরুর আগেই জিমি অ্যান্ডারসন একবার পরিষ্কার করে দিয়েছেন, অবসরের ভাবনা নেই এখনও। কিন্তু আলোচনা তো থামার নয়! কথা চলছেই, প্রশ্নও উঠছে। তবে এসব আলোচনায় কান দিতে চান না তিনি। টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসারের মতে, দলকে দেওয়ার মতো আরও অনেক কিছু এখনও তার আছে।
অ্যাশেজের চলতি ওভাল টেস্টের মাঝেই ৪১ বছর পূর্ণ হবে অ্যান্ডারসনের। আধুনিক ক্রিকেটে এই বয়সে একজন পেসারের শীর্ষ পর্যায়ে খেলে যাওয়া বিস্ময়কর। তবে পারফরম্যান্স দিয়েই সেটিকে সম্ভব করেছেন তিনি এবং দূরে রেখেছেন অবসরের আলোচনা।
কিন্তু এবারের অ্যাশেজে অ্যান্ডারসনের পারফরম্যান্সে ভাটার টান দেখেই প্রশ্নগুলি উঠতে শুরু করেছে। ওভাল টেস্টের আগে সিরিজে তিন ম্যাচ খেলে তার শিকার মাত্র চারটি। ইনিংসে একাধিক উইকেট পাননি একবারও। ওভালেও প্রথম ইনিংসে একটি উইকেটই নিতে পেরেছেন ৬৭ রান খরচায়। উইকেট যেমন ধরা দিচ্ছে না, তেমনি তার বোলিংও বেশির ভাগ সময়ই মনে হয়েছে ধারহীন।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র শুরু হয়েছে সবে। পরবর্তী অ্যাশেজও অনেকটা দূরের পথ। এবারই অ্যান্ডারসনের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সমাপ্তি কিনা, এই প্রশ্ন তাই জোরেসোরেই উঠছে। ওভাল টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অ্যান্ডারসন স্কাই স্পোর্টসকে বললেন, বাইরের আলোচনাগুলোকে তিনি নিজের কানে ঢুকতে দিতে চান না।
তিনি বলন, আমি এটাই চাইব নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে। তবে চেষ্টা করেছি, বাইরের কথা না শুনতে। এই প্রশ্ন তো গত ৬ বছর কিংবা আরও বেশি সময় ধরে শুনে আসছি। একজন বোলারের (পেসার) ৩০ বছর হয়ে গেলেই শুনতে হয়, আর কতদিন বাকি? কিন্তু গত তিন-চার বছর ধরেই আমার মনে হয়েছে, যে কোনো সময়ের মতোই ভালো বোলিং করছি আমি।
অ্যান্ডারসন আরও বলেন, অনেক নিয়ন্ত্রিত বোলিং করছি আমি। আমার শরীরও বেশ ভালো অবস্থায় আছে। আমার স্কিল অন্য যে কোনো সময়ের মতোই ভালো। আমার তাই মনে হয় না, বোলিং খারাপ করছি বা গতি হারাচ্ছি কিংবা শেষের পথে আছি। আমি মনে করি, এই দলকে এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে আমার।
উইকেট সংখ্যায় যে প্রত্যাশার প্রতিফলন পড়েনি, তা মানছেন অ্যান্ডারসনও। তবে স্রেফ উইকেট দিয়েই নিজের পারফরম্যান্সকে বিচার করতে চান না তিনি। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমরা সবাই জানি, পেশাদার ক্রিকেটারদের খারাপ সময় আসে, ব্যাটার হোক বা বোলার। আশা করতে হয় যেন, সবচেয়ে হাই-প্রোফাইল সিরিজে সময়টা না আসে।
অ্যান্ডারসন জানান, তবে আমি চেষ্টা করি উদ্দেশ্যটা দেখতে। যেভাবে বোলিং করেছি, সেসব দেখি আমি। হ্যাঁ, প্রত্যাশামতো উইকেট পাইনি, তবে দলের জন্য নিজের কাজটা করার চেষ্টা করছি, অন্য প্রান্তে থাকা বোলারকে সহায়তা করার চেষ্টা করছি এবং চাপ সৃষ্টি করার ও খেলায় কিছু একটা তৈরি করার চেষ্টা করছি।
৬৮৫ উইকেট নিয়ে অ্যাশেজ শুরু করা অ্যান্ডারসনের শিকার এখন ৬৯০টি। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম পেসার হিসেবে ৭০০ উইকেটের ঠিকানায় তিনি পৌঁছতে পারবেন কি না, তা বলবে সময়। দলে জায়গা পাওয়ার ব্যাপারটি যে তার হাতে নেই, তা জানেন অ্যান্ডারসনও। তবে হাল ছাড়বেন না বলে আবারও স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তিনি।
তিনি বলেন, দল নির্বাচনের ব্যাপারটি পুরোপুরি ভিন্ন। স্টোকসি (বেন স্টোকস) ও বাজ (ব্রেন্ডন ম্যাককালাম) যদি বলে যে, আমাদের প্রত্যাশামতো উইকেট আমি এনে দিতে পারিনি, তাতে আমার সমস্যা নেই। তবে অবসরের প্রসঙ্গে বললে, এখনই সরে দাঁড়ানোর কোনো ইচ্ছা আমার নেই। আমার মনে হচ্ছে, এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে আমার।