ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি অবমাননা মামলায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাজায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিমকোর্ট। আদালতের এমন স্থগিতাদেশে খুশি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এক টুইটবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটি বিচারবিভাগের জয়। এমনকি এই জয় ভারতকে আরও জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করার শক্তি জোগাল।
এ মামলায় রাহুল গান্ধীর দুই বছরের সাজার ওপর শুক্রবার বিচারপতি আরএস গাভাই ও বিচারপতি পিকে মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ স্থগিতাদেশ দেন। ফলে এ সংক্রান্ত সুরাট আদালতের রায় আপাতত কার্যকর হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস জানিয়েছে, ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালোবাসার জয় হয়েছে। সত্যের জয় হয়েছে।
ইন্ডিয়া জোটের শরিক সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব টুইট করে বলেন, সুপ্রিমকোর্ট রাহুল গান্ধীর সাজায় স্থগিতাদেশ দেওয়ায় বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়ল। এ ঘটনায় বিজেপির অহংকার ধাক্কা খেল বলেই কটাক্ষ তার।
জোটের আরেক শরিক রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরডেজি) সুপ্রিকোর্টের এ নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে। দলের পক্ষে লালুপুত্র তেজস্বী যাদব টুইটবার্তায় বলেন, রাহুল গান্ধীর মামলায় সুপ্রিমকোর্টের এ নির্দেশকে স্বাগত। এ নির্দেশে বড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। যদি এই ধাক্কা তাদের না লাগত তা হলে বিরোধী দলেন নেতানেত্রীদের তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার বানাতে আরও সাহস পেত। সত্যের জয় হলো।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এ নির্দেশ বিচারব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস অটুট রাখবে।
সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ২৪ মার্চ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮(৩) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ খারিজ করেছিলেন।
আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, শীর্ষ আদালত সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সংসদ সদস্য পদ ফিরে পেতে পারেন রাহুল।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্ণাটকের কোলারে ‘মোদি’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা দুই বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে।
‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় দোষী সাব্যস্ত রাহুলের দুই বছর জেলের যে সাজা গত ২৩ মার্চ সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দিয়েছিলেন, তার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে রাহুলের আবেদন গত ৭ জুলাই খারিজ করে দিয়েছিলেন গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছকের বেঞ্চ। গুজরাট হাইকোর্টের আগে সুরাটের দায়রা আদালতও সাজার রায় বহাল রেখেছিলেন।
সেই সাজার রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ১৭ জুলাই রাহুলের আইনজীবী শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন। রাহুলের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির পক্ষে আবেদনে বলা হয়, যদি গুজরাট হাইকোর্টের ৭ জুলাইয়ের রায় স্থগিত না করা হয়, তবে তা বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশ, স্বাধীন চিন্তাভাবনার কণ্ঠরোধের পরিবেশ তৈরি করবে।