বৃহস্পতিবার , ১০ আগস্ট ২০২৩ | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বেকায়দায় বিজেপিবিরোধী জোট

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
আগস্ট ১০, ২০২৩ ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ

ভারতে বিজেপিবিরোধী জোট যখন নিজেদের এক করার চেষ্টা করছে, ঠিক তখন প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমসের এক ‘তদন্ত’ বিপদে ফেলেছে তাদের। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকার বিশ্বজুড়ে তাদের প্রচারের জন্য অসংখ্য বেসরকারি সংস্থাকে অর্থ দিয়েছে।

এসব সংস্থার মধ্যে ভারতের বামপন্থী ভাবধারার সংবাদমাধ্যম নিউজক্লিক–এর নাম রয়েছে। নাম রয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে বামপন্থী তাত্ত্বিক ও সাংবাদিক হিসেবে সুপরিচিত ভারতের বিজয় প্রসাদেরও। ভারতের বামপন্থী মহলে নিউজক্লিকের কর্ণধার প্রবীর পুরকায়স্থ ও বিজয় প্রসাদ—দুজনেই সিপিআইএম (কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া—মার্ক্সিস্ট) দলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি হাতিয়ার হিসেবে নিচ্ছে বিজেপি। বিজেপির সমর্থক ও পেশাদার তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠন একদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আক্রমণ করেছে সিপিআইএম–ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক ও বাম তাত্ত্বিকদের; অন্যদিকে, ভারতের সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘বিরোধীরা বলেন, আমরা নাগপুর (যেখানে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সদর দপ্তর) থেকে নির্দেশ পাই। নাগপুর অন্তত ভারতের ভেতরে। কিন্তু বিরোধীরা নির্দেশ পান চীন ও রাশিয়া থেকে।’

বিজেপির তথ্যসম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর সরাসরি কংগ্রেসকে এ অভিযোগের সঙ্গে জড়িয়ে বলেছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে নিউজক্লিক যুক্ত আর নিউজক্লিকের মাথায় রয়েছে চীনের হাত। রাহুল গান্ধীর জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। তাঁদের ব্যাখ্যা করা উচিত, কোন যুক্তিতে তাঁরা রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের জন্য চীনের থেকে অর্থ নিয়েছিলেন।

তবে প্রতিবেদনে প্রধানত নিউজক্লিক এবং বিজয় প্রসাদ ও তাঁর সংস্থা ট্রাইকন্টিনেন্টাল লিমিটেড ইনকরপোরেশন ইউএসএর বিরুদ্ধে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের নাম করা হয়নি।

পশ্চিমবঙ্গ সিপিআইএম গত মঙ্গলবার কার্ল মার্ক্সকে নিয়ে লেখা তাঁর একটি বইয়ের জন্য বিজয় প্রসাদকে মুজাফফর আহমেদ পুরস্কার দেয়।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

৫ আগস্ট এক দীর্ঘ প্রতিবেদনে নিউইয়র্ক টাইমস নেভিল রয় সিংঘম নামের মার্কিন এক কোটিপতিকে চিহ্নিত করে, যিনি সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের অনুসারী এবং মাও সে–তুংয়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত।

নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, এই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল থেকে ভারতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চীনের মতাদর্শ প্রচার করতেন। চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে আফ্রিকাসহ বিশ্বকূটনীতির পক্ষে কথা বলার জন্য প্রভাবশালী ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সাংবাদিক ও সংবাদ সংস্থাকে অর্থ দিতেন সিংঘম।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিংঘম বিভিন্ন দেশে বেনামী দাতা গোষ্ঠীর মাধ্যমে অর্থ ঢুকিয়েছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, সেই সব দেশে চীনের রাজনীতি, কূটনীতি, অভ্যন্তরীণ নীতি বা মানবাধিকার নীতি সম্পর্কে চীনের মতামতকে তুলে ধরা।

প্রতিবেদনে যাঁদের নাম এসেছে, সেই বিজয় প্রসাদ ও নিউজক্লিকের কর্ণধার প্রবীর পুরকায়স্থ বিবৃতিতে বলেছেন, তাঁরা কোনোভাবেই কোনো আইনবহির্ভূত কাজে অংশ নেননি। বিজয় প্রসাদ বলেন, তিনি কোনো অর্থের বিনিময়ে বা কোনো সরকার বা পার্টির আদেশে কাজ করেননি।

নিউইয়র্ক টাইমসের পাঠকদের একাংশ সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে চিঠি লিখে প্রশ্ন তুলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ‘প্রোপাগান্ডা’র জন্য অর্থ খরচ করতে পারে, তবে চীন তা কেন করতে পারে না?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিশ্বের অসংখ্য দেশে ‘কংগ্রেস ফর কালচারাল ফ্রিডম’ (সিসিএফ) নামে একটি সংস্থা গঠন করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা সিআইএ। এই সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য প্রচার করার জন্য ভারতসহ গোটা বিশ্বের প্রধানত বামপন্থী লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক বা দার্শনিককে অর্থ দেয়। কমিউনিজমের বিরোধিতাও সিসিএফএর অন্যতম কাজ ছিল।

পর্যবেক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের প্রচারের জন্য অতীতে ও বর্তমানে অর্থ খরচ করতে পারে, তাহলে চীন কেন তা পারবে না। অবশ্য যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা চীনের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই নেই বলে দাবি করেছেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজনীতিতে নির্বাচনের আগে চীন একটি ইস্যু হয়ে ওঠে কি না, সেটাই এখন দেখার।

সর্বশেষ - আইন-আদালত